বরিশালের উজিরপুরের সীমান্তবর্তী সন্ধ্যা নদীর রমজানকাঠি নামকস্থান থেকে ইসরাফিল হাওলাদার নয়ন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ তার লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নিহত নয়নের প্রতিবেশী ভরসাকাঠি গ্রামের আশিক হাওলাদার (২০) নামের এক কিশোরসহ ৩ জনকে আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুল ছাত্র নয়নের মাথা ও গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে।
নয়ন উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠী গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের ছেলে ও একই উপজেলার বামরাইল অনাথ বন্ধু (এ.বি.) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবা-মা দুই জনেই চট্টগ্রাম শহরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সে ছোট থেকেই তার দাদা-দাদীর সাথে থাকছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে নয়ন তার দাদা ও বোনের সাথে বাড়ির পাশের নিজেদের কৃষি জমিতে লালশাক তুলছিলো। সন্ধ্যা নাগাদ অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা নয়নকে তার স্বজনদের কাছ থেকে ডেকে নেয়। এরপর অনেক রাত হলেও নয়ন বাড়ি না ফেরায় তার স্বজনরা চিন্তিত হয়ে গ্রামের মধ্যে খোঁজাখুজি শুরু করে। নয়নের দাদা আব্দুল খালেক জানান, তিনিসহ অন্যান্য স্বজনরা গ্রামের মধ্যে নয়নকে অনেক খোঁজাখুজি করেও পাননি। পরে গভীর রাতে চট্টগ্রাম অবস্থানরত নয়নের বাবা সোবাহান হাওলাদারের মুঠোফোনে কল দিয়ে নয়নের মুক্তির জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করে অজ্ঞাত দুস্কৃতিকারীরা।
নয়নের বাবা সোবাহান হাওলাদার জানান, মুক্তিপণের জন্য তাকে ফোন করা হলে তিনি দুর্বৃত্তদের টাকা দিবেন জানিয়ে বরিশালের উজিরপুর নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পরে সকালে বাড়িতে এসে জানতে পারেন তার ছেলের লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিবাকর চন্দ্র দাস বলেন, নয়নকে কারা ডেকে নিয়েছিলো এবং কারা তার বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবী করেছিলো সবকিছু তদন্ত চলছে।
প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে দাবীকৃত মুক্তিপণ না পেয়ে রাতের যে কোন সময় দুর্বৃত্তরা রমজানকাঠীর একটি পাট ক্ষেতে নিয়ে নয়নকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে একটি বস্তায় ইট ঢুকিয়ে নয়নকে বস্তার মধ্যে ভরে পাট ক্ষেত সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। স্থানীয়রা বস্তাটি দেখে পুলিশে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান, হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে আশিকসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আশিকের নিকট থেকে হত্যা সংশ্লিষ্ট অনেক তথ্য বের করা হচ্ছে।