করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ভয়ে টানা দেড় মাস কর্মস্থলে না আসায় কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগের টেকনোলজিস্ট মাহমুদা খানমকে। তার অনুপস্থিতির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানানোয় বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাধনা চন্দ্র সরকারকেও শোকজ নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আগামী সাত দিনের মধ্যে যথাযথ জবাব দেওয়ার নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার নোটিশটি দুজনের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস.এম সারওয়ার।
এ বিষয়ে অ্যানাটমি বিভাগের অফিস সহকারী সুশীল চন্দ্র আমাদের সময়কে বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মাহমুদা খানম একটি ছুটির দরখাস্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা অনুমোদন করেনি কর্তৃপক্ষ। তার আগেই তিনি কর্মস্থলে আসা বন্ধ করে দেন।’
সুশীল জানান, মাহমুদা খানম শেবাচিমের অর্থপেডিক্স বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক মোর্শেদ আলমের স্ত্রী। স্বামীর প্রভাবের কারণে গত দেড়মাস তিনি কলেজে নিজ কর্মস্থলে থাকেন। মাঝে মধ্যে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতেন। সর্বশেষ গত ১৬ মার্চ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে। এরপর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার কারণ দেখিয়ে তিনি আর কলেজে আসেননি। গত ৪ মে পর্যন্ত হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর না থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।’
সুশীল আরও জানান, গতকাল মঙ্গলবার মাহমুদা খানমকে কর্মস্থলে অনুপস্থিতি থাকার কারণ জানতে চেয়ে শোকজ লেটার ইস্যু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নিজ বিভাগের এক কর্মী অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানানোয় অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান ডা. সাধনা চন্দ্র মজুমদারকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়।
এদিকে শোকজের খবর পেয়ে টানা দেড় মাস পর গতকাল স্বামীকে নিয়ে কলেজে আসেন টেকনোলজিস্ট মাহমুদা খানম। বিষয়টি সমাধানের জন্য বিভাগীয় সহকারী অধ্যাপক ডা. রইচ উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে যান তারা। সুশীল জানান, বিষয়টি চেপে যেতে অনুরোধ করেও ব্যর্থ হন মাহমুদার স্বামী ও অর্থপেডিক্স বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মোর্শেদ আলম। পরে মঙ্গলবার বিকেলেই মাহমুদাকে শোকজ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে অ্যানাটমি বিভাগের টেকনোলজিস্ট আমাদের সময়কে বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমনের ভয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আপত্তির কারণে কর্মস্থলে আসতে পারিনি।’
এ বিষয়ে জানতে অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান ডা. সাধনা চন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।