স্নেহ মায়া-মমতা আর হাসি-খুশি ভালবাসার মধ্যে জীবন যাপন করা পরিবারের সদস্য স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের স্বজনেরাও মৃত্যুর পর যখন অস্পৃশ্য মনে করে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ঠিক সেই সময়ে বিশ্বব্যাপি মহামারি কভিড-১৯ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু ব্যাক্তির লাশ শেষ চিরবিদায় সৎকার করতে এগিয়ে এসেছে বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার ‘‘মনোরঞ্জন ঘটক চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’’ নামের একটি মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বড় বাশাইল গ্রামের স্বনামধন্য প্রয়াত সাবেক শিক্ষক মনোরঞ্জন ঘটকের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘‘মনোরঞ্জন ঘটক চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’’ শুধু বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবেলাই নয় তারা বিভিন্ন দূর্যোগেও আত্মনিয়োগ করেছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজে।
এই সংগঠনের সদস্যরা সামাজিক অংশ গ্রহনমুলক কাজের জন্য এগিয়ে আসায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বিভিন্ন উপকরণ প্রদান করেছেন।
করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে উপজেলার রামানন্দেরআঁক গ্রামের পঞ্চানন মিস্ত্রী’র ছেলে পরিমল মিস্ত্রী (৪৫) বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। গ্রামের লোকজন রাতভরেও যখন পরিমলের লাশ সৎকারে এগিয়ে আসে নি ঠিক সেই সময়ে শুক্রবার পরিমলের লাশ সৎকারে এগিয়ে এসেছে সামাজিক সংগঠন “মনোরঞ্জন ঘটক চ্যারিটি ফাউন্ডেশন”র সদস্যরা।
শুক্রবার দিনশেষে সংগঠনের সদস্যরা সৎকার কাজের প্রধান জিৎ ঘটকের নেতৃত্বে তাপস সরকার, সুপ্রদীপ সরকার, সজীব গুপ্ত, শান্ত গুপ্তসহ ৫ সদদ্যের প্রতিনিধিরা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরন করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিমলের সৎকার সম্পন্ন করেছে।
এর আগে মৃত পরিমলের করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির নমুনা সংগ্রহ করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে উপজেলার ঐচারমাঠ গ্রামের মৃত গোপাল হালদারের স্ত্রী কনকলতা হালদার শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে ৩০ মে মৃত্যু বরণ করেন। ‘‘মনোরঞ্জন ঘটক চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’’র সদস্যরা ওই লাশটি সৎকার করেছিলো।
সংগঠন প্রধান প্রয়াত মনোরঞ্জনঘটকের ছেলে মলয় ঘটক জানান, তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের মাধ্যমে ২০১০ সাল থেকে সামাজিক কাজের সাথে সদস্যরা জড়িত রয়েছেন। ঢাকার পোস্তগোলা মহা শ্মশানেও এমনিভাবে লাশ সৎকার করে আসছেন তিনি।
পরিমল মিস্ত্রী’র লাশ সৎকারে এগিয়ে আসায় ওই পরিবার সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈসহ স্থানীয় লোকজন স্বোচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।