বন্ধ থাকার প্রায় আড়াই মাস পর সারা দেশে চলাচল শুরু হলেও বন্ধ রয়েছে বরিশালের সঙ্গে জেলা শহর বরগুনার বাস চলাচল।
পটুয়াখালীর মীর্জাগঞ্জ উপজেলায় বাস মালিকদের পক্ষে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বরগুনা বাস মালিক সমিতির নেতারা।
অভিযোগের আংশিক সত্যতা স্বীকার করার পাশাপাশি মীর্জাগঞ্জ বাস মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সমিতির খরচ পরিচালনার জন্য এভাবে টাকা নেয়া বৈধ। তবে এটি ছাড়াও প্রধান যে সমস্যা তা হল, তিন সমিতির গাড়ি সমানভাবে এই রুটে চলার কথা থাকলেও মীর্জাগঞ্জের বাসগুলোকে সেই অংশীদারিত্ব দেয়া হচ্ছেনা। ফলে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
বরগুনা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা কিসলু বলেন, আড়াই মাসেরও বেশী সময় ধরে বন্ধ থাকার পর সারা দেশের মতো বরগুনা থেকেও গত ২ জুন বরিশাল রুটে বাস চলাচল শুরু করি আমরা। কিন্তু পথিমধ্যে পটুয়াখালী জেলার মীর্জাগঞ্জ উপজেলায় বাস শ্রমিকদের একটি গ্রুপ আমাদের বাসগুলো আটকে দেয় এবং বাস প্রতি প্রতিবার ৫০ টাকা করে চাঁদা দাবি করে।
ফলে বাস চলাচল বন্ধ করে দেই আমরা। বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসলেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। সর্বশেষ গতকাল সোমবার পটুয়াখালীর পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় একটি বাস বরিশালে পাঠিয়েছি আমরা। তবে এটি চূড়ান্ত সমাধান নয়।
পটুয়াখালী-বরগুনা এবং মীর্জাগঞ্জের মধ্যে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি ত্রি-পক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আশা করছি যে ওই বৈঠকে সমস্যার সমাধান হবে।
বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, জটিলতা নিরসনের চেষ্টা চলছে। সোমবার ২-৩টি বাস এই রুটে চলাচলও করেছে। আশা করছি যে আজ কালের মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মীর্জাগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারিক সিকদার বলেন, প্রত্যেকটা মালিক সমিতির একটি খরচ আছে। চলাচলকারী বাস থেকে সামান্য অংকের টাকা নিয়ে ওই খরচ চালানো হয়। সারা দেশেই বিষয়টি বৈধ। অথচ আমরা যখন খরচ চাইলাম তখনই জটিলতা বাঁধলো।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খোকন বলেন, মূল সমস্যা ট্রিপ নিয়ে। কথা ছিল বরিশাল-বরগুনা এবং মীর্জাগঞ্জ মালিক সমিতির বাস সমানহারে এই রুটে চলবে। কিন্তু বরগুনা ও বরিশাল মালিক সমিতি আমাদেরকে সেভাবে সুযোগ দিচ্ছেনা। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আশাকরি খুব শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে টানা আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর সারা দেশে বাস চলাচল শুরু হলেও বরগুনা-বরিশাল রুটে বাস বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বহু কষ্ট করে আমতলী ঘুরে দুই জেলায় যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। এতে করে সময় এবং অর্থ দুটোই বেশী ব্যয় হচ্ছে।