লোক সমাগম ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধার জানাজা ও দাফনের পর বরিশাল নগর থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুণ অর রশিদ (৬৭) সোমবার রাতে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরিশাল নগরীর নুরিয়া স্কুল মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মুসলিম গোরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
এমন অবস্থায় তার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানে লকডাউন ভেঙে লোকসমাগম ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় বিকেল ৩টা থেকে নগরীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি লোকসমাগম ঠেকাতে শওকত হোসেন হিরনের বাড়ি ও নুরিয়া স্কুল এবং মুসলিম গোরস্থানসহ আশপাশ এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়া নগরীতে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে দায়িত্ব পালনের জন্য চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন।
প্রয়াতের স্বজনরা জানান, মো. হারুণ অর রশিদের মরদেহ ঢাকা থেকে বিকেল ৪টার দিকে বরিশাল নগরীর আলেকান্দা নুরিয়া স্কুল সংলগ্ন তার বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এরপর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে তার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে জানাজা ও দাফনে পরিবারের লোকজন ছাড়া অন্য কাউকে অংশ নিতে আগেই অনুরোধ করা হয়েছিল। সে কারণে মো. হারুণ অর রশিদের জানাজা ও দাফনে ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য অংশ নেন।
নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মেহেদী পারভেজ খান আবির জানান, মঙ্গলবার শেষ বিকেলে তার মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা থেকে বরিশাল নগরীর নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে নিজ বাড়ির সামনে পরিবারের সদস্যসহ ঘনিষ্ঠ ১৫-২০ জনের অংশগ্রহণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় তাকে মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়।
কাউন্সিলর আবির আরও জানান, বিকেল ৩টার পর থেকেই মো. হারুণ অর রশিদের বাড়িসহ আশেপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মো. হারুণ অর রশিদের বাড়ি ও তার আশপাশের এলাকায় মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে লকডাউন থাকা সত্ত্বেও দু-একটি জায়গায় হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেন। এমন পরিস্থিতি নগরীতে যেন না ঘটে সেজন্য শওকত হোসেন হিরনের বাড়ি, নুরিয়া স্কুল এবং মুসলিম গোরস্থানসহ আশপাশ এলাকার পাঁচশ’ গজের মধ্যে পাঁচজনের অধিক লোক জড়ো হলে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তবে লোকসমাগম ছাড়াই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।