ঝালকাঠিতে প্রথম করোনা সনাক্ত হওয়া এক পরিবারের তিন জনই সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে দুবার পরীক্ষায় তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হালদার।
সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের বিন্নাপাড়া গ্রামের নাছির হাওলাদার ( ২৮), তার স্ত্রী সুমা আক্তার ( ২৩) ও তাদের ছয় মাসের শিশুপুত্র মো. সাজিদ ।
পরিবারটি নারায়ণগঞ্জে বসবাস থাকত। নাছির উদ্দিন দোকানে দোকানে বিভিন্ন মালামাল সরবারহ করতেন। ৮ এপ্রিল তারা নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরেন। এর পরে তাদের সবারই জ্বর-সর্দি দেখা দিলে করোনা পরীক্ষা করা হয়। রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হালদারের নির্দেশনা অনুযায়ী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ওমর ফারুকের তত্ত্বাবধানে হোম আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা শুরু হয় তাদের।
স্বাস্থ্য সহকারী মো. জুবায়ের হোসেন নিয়মিত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। আক্রান্তরা জ্বর ও কাশির ওষুধ খেতেন নিয়মিত। এছাড়া লেবু, আদা, এলাচি, দারুচিনি গরম পানির সাথে মিসেয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে ভাপ নিতেন এবং পান করতেন।
এর বাইরে নিয়মিত ব্যায়াম করাসহ অন্যান্য নিয়ন কানুন মেনে চলতেন। এতে এক মাসের মধ্যেই করোনাকে জয় করতে পেরেছে পুরো পরিবার।
করোনা জয়ী নাছির হাওলাদার বলেন, ‘প্রথম যেদিন শুনেছি আমার পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত, তখন একদম ভেঙে পড়েছিলাম। গরিবের সংসার কীভাবে চিকিৎসা নেব, কী খাব। কিন্তু জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জন প্রতিনিধিরা সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছেন। তারা আমাদের চিকিৎসা ও খাদ্য সাহায্যসহ সব ধরনের সহযোগীতা করেছেন। সেজন্য আমরা দ্রুত সুস্থ হতে পেরেছি। আমাদের সহযোগীতায় যারা এগিয়ে এসেছেন আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারি মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত এই পরিবারের খোঁজ খবর নিতাম। এরা নিয়ম মেনে চিকিৎসা নিচ্ছে কি না সে বিষয়ে খেয়াল রাখতাম।’
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিক্যাল অফিসার ডা. ওমর ফারুক বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় চেষ্ঠা ছিল কীভাবে এদের সুস্থ করে তোলা যায়। যখন সে ওষুধ দরকার হত আমরা তা দিয়ে দিতাম। আর তাদের মনোবল সব সময় চাঙ্গা রাখতাম। নিয়ম মেনে চিকিৎসা নেওয়ায় এরা করোনাকে জয় করতে স্বক্ষম হয়েছে।’
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘করোনার হাত থেকে বাঁচতে হলে এই মুহূর্তে সবার ঘরে থাকতে হবে। জরুরি প্রযোজনে বের হলে মাস্ক ও গ্লাভস পরতে হবে। এছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।