বরিশালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে স্বামী ও শাশুড়ির অমানুষিক নির্যাতন

অবশ্যই পরুন

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের সানুহার গ্রামে যৌতুকের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় এবং স্বামীর পরকিয়ায় বাধা দেয়ায় অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রীর হাত-পা বেধে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্বামী ও শাশুড়িসহ তাদের স্বজনরা এ নির্যাতিন চালিয়েছে বলে জানিয়েছে সোমবার দুপুরে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া এক সন্তানের জননী জান্নাতি বেগম।

জান্নাতি একই উপজেলার বাহেরঘাট গ্রামের মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে। জান্নাতির ৮ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। জন্মের পর থেকে সন্তানটি হার্ট ব্লক সমস্যা নিয়ে জীবন যাপন করছে।

অভিযুক্ত নির্যাতনকারীরা হচ্ছে : জান্নাতির স্বামী এনজিও কর্মী খায়রুল ইসলাম, শাশুড়ি আলেয়া বেগম ও তানভির মোশারেফ।

জান্নাতির পিতা মাওলানা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ১০ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে খায়রুলের সাথে জান্নাতির বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে খায়রুল তার স্ত্রীর নিকট মোটা অংকের টাকা যৌতুক দাবি করে। জান্নাতি এসে তা জানালে প্রতি বার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে দেয়া হতো। এভাবে বহু টাকা দেয়া হয়েছে

খায়রুলকে।
চাকরির সুবাধে একটি মেয়ের সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে খায়রুল। বিষয়টি জানতে পেরে জান্নাতি স্বামীকে বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কোনভাবেই খায়রুল ওই পথ থেকে না ফেরায় এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী প্রায় বাকবিতন্ডা হতো। এ সময় খায়রুল ক্ষুব্ধ হয়ে জান্নাতিকে মারধর করতো। আর সবশেষ রোববার দুপুরে খায়রুলের সাথে পরকিয়া ও আবারো যৌতুক চাওয়া নিয়ে জান্নাতির সাথে ঝগড়া হয়।

এক পর্যায়ে স্বামী খায়রুল, শাশুড়ি আলেয়া ও তাদের সহযোগী তানভীর মোশারেফ জান্নাতির হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এছাড়া জান্নাতি দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা জানতে পেরে স্বামী ও শাশুড়ি তার পেটের উপর লাথি মেরে সন্তান নষ্ট করতে রক্তাক্ত করেন। জান্নাতির আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা জানতে পেরে জান্নাতির বাবার বাড়ির খবর দিলে তারা হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

মেডিকেলে চিকিৎসাধীন জান্নাতি বেগম বলেন, সন্তানের কথা চিন্তা করে সংসার করলেও খায়রুল যৌতুক এবং পরকিয়ার বিষয় নিয়ে আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে সংসার থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আমার অসুস্থ সন্তানের জন্য আমি নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করি। সবশেষ যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তাতে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জান্নাতি আরো বলেন, এর পূর্বেও আমি অন্তঃসত্ত্বা হলে খায়রুল কৌশলে ঔষধ সেবন করিয়ে পেটের সন্তান নষ্ট করে দেয়। এ অকথ্য নির্যাতনের বিচার চাইলেন জান্নাতি ও তার পিতা।

মেডিকেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারিহা তাবাসুম বলেন, জান্নাতির আল্ট্রসনোগ্রাম করানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তার গর্ভের সন্তানের অবস্থা ভালোভাবে জানা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান জানান, স্বামী-শাশুড়ির নির্যাতনের ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

কলাপাড়ায় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে জমিহারা মানুষের সংবাদ সম্মেলন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মেগাপ্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, যথাযথ পুনর্বাসন, বিকল্প কর্মসংস্থান ও কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতা নিররসন—প্রতিকারের...