মরন ভাইরাস করোনার মহামারিতেও থেমে নেই বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া ইউনিয়নে আ’লীগ নেতার পুত্র আবেদ ও টাউটার বাচ্চু বাহিনীর অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে এরা হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।
অপরদিকে চরবাড়িয়ার মানুষ হাড়াচ্ছেন তাদের ভিটেমাটি। নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে গ্রামবাসী। করোনা ভাইরাসের কারনে সবাই ঘর মুখী হওয়ার সুযোগে দিন-রাত নির্বিঘ্নে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করেই চলছে বাচ্চু ও আবেদ অবৈধ বালু বানিজ্য। সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের গোল্ট ব্রিক ফিল্টের পাশে রাখা বাচ্চুর ড্রেজার মেশিন থেকে পাইব দিয়ে হাওলাদার বাড়ির সামনে একটি ডোবা ভরাট করা হচ্ছে। শুধু তার নয় বাচ্চুর আরেকটি ড্রেজারের মেশিন রয়েছে তালতলী ব্রিজের নিচে।
এদিকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে তালতলী এলাকার সফির গ্যারেজ সংলগ্ন একটি বাড়ি মধ্যে ভরাট চলছে আবেদ বাহিনীর। এই দুই বাহিনীর বালু উত্তোলনে এলাকা দেবে যাওয়া ও ফের বাড়ি ঘর ভাঙ্গনের হুমকির মুখে এলাকাবাসী। গত ৩১ এপ্রিল কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বোর্ড স্কুল সংলগ্ন নদীর পাড়ে এই বাহিনীদের বিরুদ্ধে মানব-বন্ধন করেছে গ্রামবাসী।
সেখানে প্রায় ৩ শ’ মানুষের জনসমাগম হয়েছিলো। এদের কারনে বিভিন্ন সময়ে চরবাড়িয়া এলাকার মানুষ একাদিকবার কীর্তনখোলার নদীর ভাঙ্গনে পড়ে বাড়ি ঘর হারিয়েছে। আর ভাঙ্গনের প্রধান কারন হিসেবে ওই ভূক্তভোগিরা বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কারনেই নদীর পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ দেশে মরন ভাইরাস করোনার মহামারিতে যখন মানুষ কষ্ঠে দিন কাটাচ্ছে। ঠিক সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে চরবাড়িয়া এলাকায় দিনের পর দিন রাতের আধাঁরে বালু উত্তোলন করেই যাচ্ছে বাচ্চু বাহিনী। থেমে নেই তাদের অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। একাধিক বাসিন্দাদের অভিযোগ স্থানীয় চেয়ারম্যান ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে এরা।
এখানে কোনো বালু মহাল না থাকলেও অবৈধ উপায়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বালু উত্তোলনের কারনেই প্রতিবছরই নদীর ভাঙ্গনে অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙ্গন রোধে এ সব নদী থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হলেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে তাদের ড্রেজার ব্যবসা। গ্রামবাসীরা আরো বলেন নিষেদ করে কিংবা চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি আমরা। করোনা ভাইরাসের চেয়েও আমাদের কাছে নদী ভাঙ্গন বড় আতংক”।
অভিযুক্ত আ’লীগ নেতার পুত্র আবেদ বলেন আগে বালু উঠাতাম এখন আর উঠাই না। অন্যদিকে ড্রেজার ব্যবসায়ী বাচ্চু বলেন, নদী দিয়ে এখন আর বালু উঠাইনা। আমি বাবুগঞ্জ থেকে বালু এনে ডোবা ভরাটের কাজ করছি। তাতে আপনাদের কি। তিনি আরো বলেন, মানুষের পুকুর, ডোবা ভরাটের জন্য ভিটি বালুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই সাংবাদিক ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই আমার বালু ব্যাবসা চলে।
আপনি নিউজ করে যত মনে চায়। তাতে আমার কিছুই হবেনা। উল্লেখ্য, এই বাচ্চুকে বরিশাল সদর উপজেলার আগের ইউএনও মো. হুমায়ুন কবির ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আমিনুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী সেতু সংলগ্ন কীর্তনখোলার পয়েন্ট থেকে ড্রেজার মেশিন সহ আটক করেছিলেন বাচ্চুকে। তাকে বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর আওতায় দেড় লাখ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছিলো। তার পরেও থেমে নেই বাচ্চুর অবৈধ বালু বানিজ্য।
বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন কোনো বালু মহাল নেই। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সাংসদ কর্নেল (অ:) জাহিদ ফারুক শমিম ওই ভূক্তভোগি জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন,শুধু মানব-বন্ধন নয়,যারা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করবে তাদের গন ধোলাই দিয়ে পুলিশে দিন। বলগেট পুড়িয়ে দিন। সে যে দলের নেতাই হোক ভয় না করার আহবান করেন গ্রামবাসীর প্রতি।