চাঁদার দাবিতে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহে আলম তালুকদারসহ ১৪ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতকাল বুধবার বাদী হয়ে মামলাটি করেন সৈয়দ আতিকুর রহমান। তিনি বানারীপাড়া উপজেলার চাখার গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সৈয়দ জিল্লুর রহমানের ছেলে।
আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় শাহে আলমের এক ভাই ও তিন চাচাতো ভাই, ভাগনেসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। শাহে আলম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলেন।
শাহে আলম তালুকদারসহ মামলার অন্য আসামিরা হলেন তাঁর ভাই রিয়াজ তালুকদার, তাঁদের তিন চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হুদা তালুকদার, বরিশাল জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ স্বপন এবং রিয়াজ তালুকদার, বানারীপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত কুণ্ডু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন রায়, ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগ কর্মী পরিতোষ গাইন ও রোথেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে শাহে আলম তালুকদারকে গেজেটভুক্ত রাজাকারের সন্তান উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন মামলার বাদী সৈয়দ আতিকুর রহমান (বাপ্পি)। পরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০১৯ সালে শাহে আলম তালুকদার তাঁকে মারধর করেন। এতে তাঁর ডান পা অচল হয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা করলে বাদীর ওপর ক্ষিপ্ত হন।
মামলা প্রত্যাহারের জন্য হত্যার হুমকি দিয়ে চাপ দেন। বাধ্য হয়ে ওই সময় সেই মামলা তিনি প্রত্যাহার করেন। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, মামলা প্রত্যাহারের পর বানারীপাড়া খেলাঘর পাঠাগার নির্মাণের জন্য সৈয়দ আতিকুর রহমানের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন শাহে আলম ও অন্য আসামিরা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ২০২২ সালের ১০ আগস্ট শাহে আলমের নেতৃত্বে আসামিরা সৈয়দ আতিকুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। এ সময় তাঁর স্ত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যা করে সন্ধ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। শাহে আলম তালুকদার সংসদ সদস্য থাকায় এবং তাঁর ভাইয়েরা এলাকায় বিভিন্ন পদে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকায় এত দিন মামলা করতে পারেননি বলে বাদী উল্লেখ করেছেন।