নির্যাতনের বিভিষিকাময় দিনগুলি ভুলে নতুন উদ্যমে শুরু করেছিলেন একজন হতভাগা জন্ম জননী। জীবন সংগ্রাম করে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রাণপন চেষ্টা করেছেন পলি আক্তার নামের এক সন্তানের জননী। বিবাহের পরেই পলির জীবনে নেমে আসে অমানিষার ঘোর অন্ধকার। সেই অন্ধকারের মাঝে অনেক নির্যাতন হজম করে স্বামীর সংসারেই রয়ে যায় পলি। তবে তার ওপরে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়,যখন তিনি অত্মসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে দরিদ্র পলির পরিবারের কাছে দাবীকৃত যৌতুক না পেয়ে তার ওপরে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় তার স্বামী উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাছরং গ্রামের আলআমিন।
পলির অসহায় দরিদ্র বাবা আবু বক্কর মুন্সী ও মা জবেদা বেগম পেশায় ভিক্ষুক হওয়ায় মেয়ে জামাতার যৌতুকের চাহিদা মেটাতে পারছিলেন না। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই পলিকে তালাক দেয় তার স্বামী আলআমিন। তার ঠাই হয় ভিক্ষুক বাবা-মায়ের সংসারে। পরে পলির কোল জুড়ে আসে এক ছেলে সন্তান। ওই ছেলের নাম মো. মিরাজ (১১)। বর্তমানে সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণীর শিক্ষার্থী সে। মায়ের সংসারে থেকে একটি গরু পালন করে সংগ্রামী জীবন শুরু করেণ পলি। একে একে একটি গরু থেকে এ পর্যন্ত ৫/৬ টি গরুর বাচ্চা বিক্রি করে সাবলম্বী হয়ে ওঠেন পলি।
ফলে সংগ্রামী জীবন যাপন করে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবসে বানারীপাড়া উপজেলা থেকে জীবন সংগ্রামী পলি জয়িতার পুরস্কারে ভূষিত হন। পলির পরিবার অসহায় হওয়ায় পূর্ব থেকেই তাদের একই বাড়ি উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন’র ইন্দেরহাওলা গ্রামের মো. রিপন হাওলাদার,মো. রশিদ হাওলাদার,মো. আদম আলী হাওলাদার,মো. রফিক হাওলাদার গং’রাসহ আরও ২/৩জন অজ্ঞাতনামা লোক গত ৩০ মে দুপুর ২টার সময় জবেদা বেগমকে জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে
মারধর করে। তার ডাকচিৎকারে তার মেয়ে জয়িতা পলি ও নাতী মিরাজ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেদম মারধর করে এবং পলির শ্লীলতাহানী ঘটায় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। ওই দিনই উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিবাদী করে জবেদা বেগম বানারীপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেণ। বর্তমানে জয়িতা পলির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হয়েছে।