করোনা ভাইরাসের কারনে সরকার সব ধরনের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ করলেও তা মানছেন না মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার এনজিও গুলো। ৩১ মে সরকারি বে-সরকারি অফিস খুলে দেয়ার পর থেকেই আধাজল খেয়ে বিভিন্ন এনজিও’র মাঠকর্মীরা নেমে পড়েছে মেহেন্দিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়।
এ নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ। এমনকি কিস্তি আদায়ের জন্য গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে বসে থাকা ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে আয় উপার্জন ও ব্যবসা না থাকায় কিস্তি দেওয়া নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারন মানুষ। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০/২৫ টির মতো বিভিন্ন এনজিও কার্যক্রম চলমান। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি ( এমআরও) আগামি ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিও ক্ষুদ্রঋণ শ্রেনীকরন কার্যকর হবেনা বলে নির্দশনা জারি করে সেই সঙ্গে নির্ধারিত সময় শেষে কোনো প্রকার জরিমানা ছাড়াই বকেয়া কিস্তি গ্রহন করা হবে। কিন্তু মেহেন্দিগঞ্জের এনজিওগুলো এ নির্দেশনা না মেনে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কিস্তির টাকা আদায়ে ব্যস্ত।
কালিকাপুর এলাকার রিক্সা চালক বাবুল জানান,আশা এনজিও থেকে লোন নিয়ে রিক্সায় মটার লাগিয়েছে কিন্তু করোনার কারনে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন আগের তুলনায় অর্ধেক নেমে এসেছে। এমতাবস্থায় এনজিও থেকে ফোন দিয়ে কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে, তারা সময়ও দিতে চাচ্ছেন না। অপর দিকে পাতারহাট বন্দরের এক লোন গ্রহীতা ব্যবসায়ী জানান, আমার কোনো মাসিক কিস্তি বাকি নাই। প্রতি মাসেই কিস্তি পরিশোধ করে দেই। সরকারি নির্দেশে বন্ধ থাকা মাসের কিস্তির জন্য প্রতিদিনই ফোন দিতেছে মাঠ কর্মীরা।
এ ব্যাপারে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন সংস্থার মেহেন্দিগঞ্জ ব্যাঞ্চের কমিউনিটি ম্যানেজার জাহিদের কাছে কিস্তি উঠানোর বিষয়টি জানতে চাইলে সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি কিস্তি উঠানোর কথা স্বীকার করেন। অপর দিকে ঐ সংস্থার মেহেন্দিগঞ্জ ব্যাঞ্চের ম্যানেজার বিপুল হালদার জানান, তার কোনো মাঠকর্মী জোর করে লোন গ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় করছে না,,,যদি গ্রাহক স্ব-ইচ্ছায় প্রদান করেন,, তবেই তারা নেন। অথচ এই পদক্ষেপ এনজিও এর বিরুদ্ধে সারাদেশে লকডাউন চলার সময় অফিস খোলা রেখে গ্রামে গ্রামে মাঠকর্মী পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিস্তি আদায়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সোমবার সকালে মেহেন্দিগঞ্জ পৌর এলাকার কালিকাপুর গ্রামের মেকার বাড়ির একটি ঘরে বসে আশা-১ এর মাঠকর্মী রিয়াজকে কিস্তি আদায় করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ আশা-১ ম্যানেজারের নিকট জানতে চাইলে তিনি এমআরও নতুন নীতিমালা অনুযায়ী বন্ধের মধ্যেই কিস্তি আদায় করতেছে বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে ‘র নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, কোনো এনজিও যদি জোর করে কিস্তি আদায় করে থাকেন এবং কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।