বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের বান্না গ্রামের পুকুর থেকে বস্তায় বিধবা গৃহবধূ শাহনাজ বেগমের (৫৩) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ব্যাগের ভেতরের 8টি ইট খুঁটির সাথে বাঁধা।
সোমবার (২০ মার্চ) বিকেলে উদ্ধার হওয়া সন্তানহীন শাহনাজ ওই গ্রামের মৃত কদম আলী শাহের স্ত্রী। মামলার বাদী মনে করেন, তার শ্যালককে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান জানান, পুকুরটির মালিক বরিশাল শহরের আইনজীবী সেলিনা বেগম। মাছ ধরার জন্য পুকুরে সেচ দিতেন। এ সময় পুকুরের মাঝখানে একটি খুঁটি ও প্লাস্টিকের ব্যাগসহ লাশ পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ব্যাগটি উদ্ধার করে তীরে আনার পর দেখা যায়, অর্ধগলিত লাশসহ ব্যাগের ভেতরে ৮টি ইট রাখা ছিল। যাতে শরীর ভেসে না যায়। এ সময় নিহতের স্বজনরা শাড়ি ও চুরি দেখে লাশ শনাক্ত করেন। তারা জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি শাহনাজ নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
মামলার বাদী শাহনাজের ভাইয়ের ছেলে আল আমিন জানান, যে প্লাস্টিকের ব্যাগে লাশ রাখা হয়েছিল তাতে ‘আমান ফিড’ লেখা ছিল। পুলিশ গ্রেফতারকৃত ইদ্রিস মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার বাড়ি থেকে ব্যাগটি উদ্ধার করে। সে মনে করে ইদ্রিস তার চাচাতো বোন শাহনাজ বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। এরপর ইদ্রিসের বাড়ির বস্তাগুলো খুঁটিতে ভরে পুকুরের ভেতরে বেঁধে রাখা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসআই ওবায়দুল কবির জানান, নিখোঁজের দিন তাকে হত্যার পর লাশ পুকুরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। 24 দিন পানিতে পচন ধরে লাশ। যার কারণে কিভাবে সে হত্যা করেছে তা বোঝা সম্ভব হয়নি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশাল জেলা ডিবি পুলিশের এসআই কাজী ওবায়দুল কবির জানান, একটি বস্তায় ৮টি ইট ভর্তি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাগটি পুকুরের তলদেশে দুটি দড়ি দিয়ে উভয় প্রান্তে খোঁচা দিয়ে রাখা হয় যাতে এটি ভেসে না যায়। উদ্ধারকৃত নারীর চুড়ি ও শাড়ি দেখে স্বজনরা লাশ শনাক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১ মার্চ নিহত শাহনাজের ভাইয়ের ছেলে আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তিনি মনে করেন, শাহনাজকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পরপরই ইদ্রিসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কখনো স্বীকারোক্তি দেয়নি। ইদ্রিস বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তবে ঘটনার সূত্র ধরে ইদ্রিসের বাড়িতে শাহনাজকে যে বস্তায় রাখা হয়েছিল তার অনুরূপ একটি বস্তা পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও আশপাশের তদন্তের অপেক্ষায় ইদ্রিসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হবে।