বরিশালের চরকাউয়া ইউনিয়নের ছনের মসজিদ এলাকায় একটি বিরোধপূর্ণ সম্পত্তি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একপক্ষের দখলে জমি থাকলেও তা নিজেদের দাবি করে অপর পক্ষ সেখানে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতায় বাউন্ডারি দিয়ে দোকান নির্মাণ পায়তারা চালাচ্ছে। এনিয়ে দু’গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় সেখানে রক্তপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, ৩৪ শতাংশের এই জমিতে বরিশাল আদালতের স্থিতিবস্থা থাকলে এবং বন্দর থানা পুলিশ জমিতে স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বললে তাও মানছে কোনো পক্ষ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, এলাকার বাসিন্দা মকবুল হোসেন হাওলাদারের ওয়ারিশগণ চরকাউয়া টু নেহালগঞ্জ সড়কের পাশের জমিটি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করে আসলেও কয়েক বছর পুর্বে তার মালিকানা দাবি করে প্রতিবেশী এসাহাক চৌকিদারের ছেলে সুজন চৌকিদার। এনিয়ে বিরোধ তৈরি হলে কয়েক দফা স্থানীয়ভাবে সালিশ মীমাংসার উদ্যোগ নিলেও সুরহা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে হাবিবুর রহমানের ওয়ারিশগণ এনিয়ে বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেলে বিচারক জমিতে স্থিতিবস্থা জারি করেন।
হাবিবুর রহমান জানান, তার বাবা মকবুল হোসেন হাওলাদার জমিটি ১৯৮৬ সালে হোসেন আলীর কাছ থেকে ক্রয় করেন। এর পর থেকে জমিটি ভোগদখল করছেন। কিন্তু ২০১৮ সালে সুজন চৌকিদার দাবি করে একই জমি তারা দাদা আব্দুর রহিম বিক্রি করেননি। বরং জমিটি দাদা তার বাবা এসাহাক চৌকিদারকে দিয়ে গেছেন। এনিয়ে বিরোধ তৈরি হলে হাবিবুর রহমান আদালতের দ্বারস্থ হন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, আদালতে মামলা চলমান এবং জমিতে স্থিতিবস্থা থাকলেও জমিটি সম্প্রতি স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবির কাছে বিক্রির পায়তারা চলছে।
তবে বিরোধপূর্ণ এই জমি বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সুজন চৌকিদার। তার দাবি, হাবিবুর রহমানের বাবা জমি কিনেছেন ৫১৫৩ নম্বর দাগে। কিন্তু তারা এখন ৩১৫৩ নম্বর দাগের যে জমি ভোগ করছেন, তার মালিকানা আমার বাবা।
এক্ষেত্রে হাবিবুর রহমানের ভাষ্য হচ্ছে, দলিল করার সময় লেখল ভুল ক্রমে ৩১৫৩ দাগের স্থানে ৫১৫৩ লিখেছেন। এনিয়ে আদালতে সংশোধনী মামলা করলে বিচারক স্থিতিবস্থা জারি করেছেন।
এদিকে মামলা চলমান ও স্থিতিবস্থার মধ্যে সেই জমিতে সুজন বাউন্ডারি দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সর্বশেষ সেই জমিতে দোকান নির্মাণে পায়তারা চলছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিমত, বিরোধপূর্ণ এই জমি নিয়ে এখন যে পরিবেশ বিরাজ করছে, তাতে রক্তপাতের আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশ দায়সারা কাজ করায় সংঘাতের আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যদিও বন্দর থানা পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলছেন, ওই এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ নজরদারী রাখছে। বিরোধপূর্ণ জমিতে আদালতের ১৪৪ ধারা জারি আছে। ফলে সেখানে কোনো ভাবেই দোকানপাট বসাতে দেওয়া হবে না।’