বরিশাল নগরীর একটি আবাসিক হোটেলে যুবককে আটকে মারধর করাসহ নারী ফিটিং দিয়ে তার অর্থ কেড়ে নেওয়া হয়। এমনকি ঘটনা ফাঁস করা হলো তাকে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বুধবার রাতে শহরের মহশিন মার্কেটের সম্মুখে ‘ভোলা বোর্ডিং’র এই ঘটনায় কোতয়ালি পুলিশ যুবকের টাকা উদ্ধার করে দিয়েছে। কিন্তু রহস্যজন কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করায় নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
রনি মিয়া নামের যুবক জানায়, বরিশালে চিকিৎসা করাতে এসে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় লঞ্চঘাটে হোটেলে খুঁজতে থাকলে এসময় এক যুবক এসে ভোলা হোটেলে নিয়ে যায়। এবং রুম ভাড়া ২০০০ টাকা দাবি করলে দরাদারি করে ১২ শ’তে চুক্তি হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আকস্মিক এক তরুণীকে রুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই তরুণী কিছু না বলেই শরীরের পোষাক খুলতে থাকে। এবং যুবককে মারধর করাসহ তার ম্যানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে তাকে থাকা ৩৫০০ টাকা নিয়ে যায়।
যুবক আরও জানান, সব টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পরে হোটেল ম্যানেজার দরজা খুলে তরুণীকে বের করে দিয়ে তিনি ভেতরে প্রবেশ করেন। এবং ঘটনাটি কাউকে বললে খুন করাসহ লাশ গুমের হুমকি দেয়। এসময় কান্নাকাটি করলেও তাকে সকালের আগে ছাড়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরবর্তীতে যুবক কৌশল নিয়ে তার চাচার কাছে যাওয়ার কথা বললে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরক্ষণে যুবক কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের কাছে গিয়ে একটি পুরো ঘটনা তুলে ধরে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান সর্ঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ছুটে যান। কিন্তু এর আগেই তরুণীকে হোটেল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
রনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে তাদের আটক করার কথা বললেও পরবর্তীতে হোটেলে গিয়ে একজনের সাথে একান্তে আলাপের পরে কিছুটা নমনীয় হয়ে যায়। পরে হোটেলের লোকজনের কাছ থেকে ৩৫’শ টাকার ৩২’শ উদ্ধার করে দিলেও কাউকে আটক করেনি। পুলিশের এই ভূমিকায় যুবক বিস্মিত হলেও কিছু বলার সাহস দেখাননি।
কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, যুবক হোটেল ভাড়াসহ ৩৫’শ টাকা নেওয়ার তথ্য দিলেও পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলছেন, নিয়েছিল মাত্র ১২’শ টাকা। সেখান থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া দেওয়ার পরে বাকি ৯’শ টাকা উদ্ধার করে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এত বড় একটি অপরাধমূলক ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার হয়নি কেন এমন প্রশ্নে পুলিশ কর্মকর্তা কোনো উত্তর দিতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন। একপর্যায়ে তালগোল পাকিয়ে বলেন- টাকাতো উদ্ধার করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হোটেলের ম্যানেজার কালামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।’