কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: এ কেমন আজব কান্ড দোকানে বসে পোল্ট্রি ডিম বিক্রিতেও খাঁজনা দেওয়া লাগে। তাও চাঁদাবাজের মতো হাতিয়ে নেয়া হয়। না দিলে মারধর পর্যন্ত করা হয়। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কলাপাড়া এবং কুয়াকাটা পৌরসভার এই চিত্র। পটুয়াখালীর সদর উপজেলাসহ কোথাও দোকানে বিক্রি করা পোল্ট্রি ডিমের কোন খাজনা নেই। জনস্বার্থে এটি বলবৎ রাখা হয়েছে। অথচ কলাপাড়া-কুয়াকাটা পৌরসভায় ভিন্ন চিত্র।
বিক্রেতা শওকত হোসেন জানান, গেল বছর শুধুমাত্র ডিম বিক্রির জন্য বাজারের ইজারাদারকে দুই লাখ টাকা খাজনা বাবদ দিতে হয়েছে। কিন্তু এ বছর চাওয়া হচ্ছে ডিম প্রতি এক টাকা। ডিম বিক্রেতাদের হিসাব মতে কলাপাড়া পৌরশহরে বছরে অন্তত ৮০ লাখ ডিম বিক্রি হয়। তাইলে কী ডিম বাবদ ৮০ লাখ টাকা দিতে হবে? আর কুয়াকাটায় বিক্রি হয় অন্তত ১৫ লাখ ডিম। একটি ডিম বিক্রি করলে ১৫-২০ পয়সা ব্যবসা হয় বলে দোকানিদের দাবি। বিক্রেতাসহ সাধারণ ক্রেতাদের কাছে ডিম একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। নি¤œবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরা ডিম ছাড়া অচল। আর সেখানে অন্য কোন এলাকায় ডিমের বিক্রিতে কোন কর কিংবা খাজনার বিধান নেই। কিন্তু কলাপাড়া এবং কুয়াকাটা পৌরসভায় চলছে রামরাজত্ব। ডিম প্রতি এক টাকা খাজনা চাওয়ায় কলাপাড়া পৌরশহরের বিক্রেতারা দুই দিন ডিম বিক্রি বন্ধ রাখেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেনের আশ^াসে ফের শনিবার থেকে দোকান খুলেছেন ডিম বিক্রেতারা। এমনকি খাজনা আদায়ের জন্য আবার সরকার দলীয় ক্যাডার নিয়োজিত রয়েছে। তাদের চাহিদামতো টাকা না দেয়ায় দোকানকর্মী অসীম ফরাজীকে শনিবার মারধরও করেছে। আরেক দোকানে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া হয়েছে।
কুয়াকাটার ডিম বিক্রেতা জাকির হোসেন জানান, তারা গেল বছর ডিম প্রতি ২৫ পয়সা পৌরসভার খাজনা দিয়েছেন। খোলামেলা ডিমের জন্য আলাদা খাজনার টেন্ডার দেয়া হয়। তিনি দাবি করেন খাজনা না থাকলে সবার জন্য ভালো হয়। এভাবে কলাপাড়া ও কুয়াকাটা পৌরসভায় যেন কোন নিয়ম নীতি নেই। খোলা-মেলা ডিমের জন্য খাজনা আদায় করা হয়। ফলে ক্রেতা সাধারণকে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। কলাপাড়া পৌর বাজারের ইজারাদার সালাম সরদার জানান, গরু বাজার ছাড়া কোন বাজার ইজারায় নির্দিষ্ট করা নেই। তবে ডিম এ কয় বছর ঘুন্ডিমহলের মধ্যে পড়েছে। ডিম বিক্রিতে এ বছর খাজনা আদায় নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। যা আজকালের মধ্যে সমাধান করা হবে। কুয়াকাটার পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানান, ডিমের জন্য খাজনা আদায় অন্যত্র বন্ধ থাকলে আমরাও বাদ করে দেব। কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিনি পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন। ডিম বিক্রিতে কোন ধরনের খাঁজনা আদায় করা যাবেনা। জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।