ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডবে কলাপাড়ায় হাজারো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে গাছপালা। ভেসে গেছে হাজার হাজার পুকুর—ঘেরের মাছ। নষ্ট হয়ে গেছে সবজির আবাদ। রক্ষা হয়নি আউশের আবাদ। বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত নয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।
উপজেলার অন্তত ১২ গ্রামের মানুষ জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের, হাজারো পরিবার। কাউয়ার চরের জেলে মুসা জানান, তার ঝুপড়ি ঘরটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। গবাদিপশু ভেসে গেছে। একই দশায় জহিরুলের পরিবার। টিনশেড ঘরটি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম জানান, ছয়টি ওয়ার্ডের কমপক্ষে দেড় হাজার পরিবারের বসবাস বেড়িবাঁধের বাইরে। সবাই কমবেশি ক্ষতির কবলে পড়েছেন।
উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরের একই দৃশ্য। সরকারিভাবে কলাপাড়ায় ৭৬০টি পরিবারের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ১৮০ হেক্টর জমির শাকসবজি, ৫৮ হেক্টর জমির পাট, ২৫ হেক্টর জমির পেঁপে, ১০ হেক্টর জমির তিল, ৫০ হেক্টর জমির কলা নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ১০৬ হেক্টর আউশ বীজতলা ও ১৭৮ হেক্টর জমির আবাদ করা আউশক্ষেত।
কুমিরমারা গ্রামের সবজি চাষি সুলতান গাজি জানান, তাঁদের করলা, ঝিঙে, ঢেড়শ, পুঁইশাক, চিচিঙ্গা, শসাক্ষেত সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রত্যেক কৃষকের কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এ কৃষকের দাবি। কারও ক্ষতির পরিমাণ লাখ টাকারও বেশি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন পোল্ডারের বেড়িবাঁধের ২২টি পয়েন্টে অন্তত নয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধের অন্তত ১১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রেমাল তাণ্ডবে কলাপাড়ার মৎস্য সেক্টরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অফিস সূত্রে জানা গেছে, কলাপাড়ায় ৪৬৯০ টি পুকুর ও ৭৭৮টি মাছের ঘের ডুবে ভেসে গেছে মাছ।
এতে অন্তত ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, কলাপাড়ায় জরুরিভাবে ত্রাণ মন্ত্রণালয় পাঁচ লক্ষ টাকা, গোখাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা, জিআর ২০০ টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।