স্টাফ রিপোর্টার: পটুয়াখালীর গলাচিপায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম বন্ধ, সেবার মানোন্নয়নে ৯ দফা বাস্তবায়ন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মেজবাহ উদ্দিনের অপসারণের দাবিতে পুনরায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টায় গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে আন্দোলনকারীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গলাচিপা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. রফিকুল ইসলাম, মো. নিরব হোসেন, মো. নাসুরুল্লাহ নাসু ও বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পলি আক্তার প্রমুখ এ সময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অনিয়ম চলছে। চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা, রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার, ওষুধ সংকট, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ভবনের বেহাল অবস্থা এখন নিত্যদিনের চিত্র। বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটর চলে না, রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট ধরিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় যা জনসাধারণের ভোগান্তি বাড়িয়েছে।
এছাড়া বক্তারা আরও বলেন, ডা. মেজবাহ উদ্দিন এর আগেও টাকা দিয়ে, প্রভাব খাটিয়ে ৩ বার বদলি ফিরিয়েছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগও তুলেন বক্তারা। বক্তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, এ হাসপাতালের বর্তমান ইউএইচএফপিও ডা. মেজবাহ উদ্দিনের দায়িত্বে আসার পর থেকেই শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে অসদাচরণ করেন এবং সংস্কারের বিষয়ে উদাসীন। তাই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর অপসারণ না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
এসময় বক্তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডা. মেজবাহ উদ্দিনকে অপসারণ, বিগত ৩ বছরের তার ইউএইচএফপিও থাকাকালীন সকল দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্ত, হাসপাতালের প্রাপ্ত বরাদ্দ ও ব্যয়ের পূর্ণ বিবরণী প্রকাশের দাবি করেন। আন্দোলনকারীদের ৯ দফার মধ্যে ছিল, হাসপাতাল ও আশপাশের সব বর্জ্য অপসারণ।
টয়লেট, বাথরুম ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা পরিষ্কার রাখা। রোগীদের খাদ্যতালিকা ও সরকারি বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ। ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে শূন্য পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ। পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার কাজ শুরু। গর্ভবতী মায়েদের জন্য সিজার সুবিধা চালু।
আধুনিক ল্যাব, এক্স-রে রুম ও স্টোর রুম স্থাপন। ডিজিটাল টোকেন ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন চালু। অন্তত দুটি সচল অ্যাম্বুলেন্স ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হাসপাতালের জনবল সংকট ও কিছু সংস্কার বিষয় আমরা ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
স্থানীয়ভাবে যা করা সম্ভব, তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অপসারণের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং কোন এক কুচক্রী মহল এ দাবি তুলেছে। উল্লেখ্য, গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে গতকাল ঢাকায় প্রেস ক্লাবের সামনেও একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।