More

    কলাপাড়ায় ইলিশের অভয়াশ্রম আন্ধারমানিক নদী তীরে ইটভাঁটা

    অবশ্যই পরুন

    কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদী তীরে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চলের পাশেই ড্রামচিমনির ইটভাঁটা করা হয়েছে। নীলগঞ্জ গ্রামে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এছাড়া অন্যান্য বেশ কিছু ইটভাটাতে কয়লার পাশাপাশি পোড়া হচ্ছে কাঠ।

    মৌসুমের শুরুতেই কাঠ মজুদ করা হয়। সংগ্রহ করা হচ্ছে কৃষিজমিসহ বিভিন্ন নদী থেকে মাটি। এসব চলছে ফ্রি-স্টাইলে। কমে যাচ্ছে সবুজের আস্তরণ, গাছপালা। কমে যাচ্ছে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল। হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। সব চলছে ফ্রি-স্টাইলে।

    ইলিশের অভয়াশ্রম আন্ধারমানিক নদীসহ বিভিন্ন নদী তীরে এসব ইটভাটা নির্মিত হয়েছে। ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চলের আশপাশে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। সকল নিয়মনীতি, আইন-কানুন উপেক্ষা করে কৃষিজমিতেও ইটভাটা করা হয়েছে। মানুষের বসতি এলাকায়ও ইটভাটা রয়েছে। উপকূলীয় কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক, খাপড়াভাঙ্গা, সোনাতলা, আরপাঙ্গাশিয়া নদী তীরের ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল রয়েছে। আর এসব নদীর তীরেই অধিকাংশ ইটভাটা করা হয়েছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল নদী তীরের খাস জমি পর্যন্ত দখল করে ইটভাটা করেছেন। সবচেয়ে বেশি অন্তত ১৫টি ইটভাটা রয়েছে ইলিশের অভয়াশ্রম আন্ধারমানিক নদী তীরে।

    কয়লার পাশাপাশি কাঠের বিশাল স্তুপ রয়েছে।

    ভাটার শ্রমিকরা দাবি করেন, প্রথম দফায় ভাটায় আগুন জ্বালানোর জন্য কাঠের দরকার রয়েছে। ইটভাটার আশপাশের বসতিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের অভিযোগ, এসব ইটভাটার ধোঁয়ায় তাদের সমস্যা হয়।

    ধোয়ার সঙ্গে নির্গত ছাইতে গাছপালা থেকে শুরু করে ঘরবাড়ির টিনের চাল পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। আন্ধারমানিক নদী তীরের ইটভাটা অপসারনের জন্য বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন এসব ইটভাটা বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

    কলাপাড়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কলাপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর জাকি হোসেন খান জুকুর দেয়া তথ্যমতে উপজেলায় তাদের সমিতিভূক্ত ৩৭ টি ইটভাটা রয়েছে। তার দাবি সরকারি নিয়মনীতি মেনেই তারা ইটভাটা করেছেন। তবে এখানে ইটভাটা আরও বেশি রয়েছে বলে দাবি করেছে সচেতনমহল।

    বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কলাপাড়া আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক শাহাদৎ হোসেন বিশ্বাস জানান, পরিবেশ রক্ষায় যথাযথ নিয়ম মেনে এসব ইটভাটা না করলে পরিবেশ দূষণ বাড়বে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়া উপকূলের এই উপজেলায় নদীতীর ঘেষে অসংখ্য ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রয়েছে। যা রক্ষায় নদী তীরের ইটভাটা বন্ধ করা প্রয়োজন।

    কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার জানান, জনবসতি এলাকায় ইটভাটা করলে ভাটার নির্গত ধোঁয়ায় মানুষ শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমিত হওয়া, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
    এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকিও রয়েছে বলে জানালেন এই চিকিৎসক।কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, ইটভাটায় পরিবেশ বিনাশী কার্যক্রম চললে সরকারি বিধিমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
    বরিশাল নিউজ/স্ব/খ

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    মামলা উত্তোলনের জন্য মা ও মেয়ের ওপর হামলা

    জমি সংক্রান্ত বিরোধে দায়ের করা মামলা উত্তোলনের জন্য বিধবা আয়েশা বেগম ও তার মেয়ে রিনা বেগমকে মারধর করে আহত...