বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মুক্তিযোদ্ধার জন্য বরাদ্দ “বীর নিবাস” ঘর মেয়ের বাড়িতে নির্মাণের অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধার ছেলের সংবাদ সম্মেলন। এব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবে রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নাসির উদ্দিন জানান, গৈলা ইউনিয়নের সেরাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোসলেম আলীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় থেকে সরকারী ভাবে একটি “বীর নিবাস” ঘর বরাদ্দ হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর মেয়ে ও উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমার বোন বিউটি হক আমার কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলনের কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও স্বাক্ষর নেয়। ওই ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্বাক্ষর দিয়ে হলফনামা তৈরি করে বিউটি হকের শ্বশুর বাড়ি বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামে “বীর নিবাসের” জন্য জায়গা নির্ধারন করেন। এ খবর জানতে পেরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর একমাত্র ছেলে নাসির সেরনিয়াবাত ঘরের জায়গা পরিবর্তন করে সেরাল গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের পাশে “বীর নিবাস” নির্মানের জন্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষন করেন। মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নাসির সেরনিয়াবাত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, আমার ছোট বোন বিউটি হক আমার পিতার নিজ নামের রেকডীর্য় জমির কাগজপত্র আমার কাছ থেকে নিয়ে সেই কাগজপত্র অফিসে জমা না দিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারনার মাধ্যমে তার শ্বশুরের নামের কাগজপত্র জমা দিয়ে তার শ্বশুরের বাড়িতে “বীর নিবাস” নির্মানের পায়তারা করছে।
“বীর নিবাস” বোনের শ্বশুর বাড়ির পরিবর্তে পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত মোসলেম আলীর কবরের পাশে নির্মাণের দাবী করেন তিনি। তিনি আরও জানান, “বীর নিবাস” এর ঘর বোনের শ্বশুর বাড়ি নির্মানের জন্য আমাকে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে ২—৩ লক্ষ টাকা দেবার কথা বলেন আমার ছোট বোন বিউটি। আমি এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে বিউটি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নাসির সেরনিয়াবাতের মামা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেরনিয়াবাত আব্দুল মান্নান। এব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোসলেম আলীর মেয়ে ও উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিউটি হক বলেন, টাকা দেওয়ার ও হুমকি—ধামকি দেওয়ার কথা মিথ্যা ভিত্তিহীন। আমার বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন জীবিত থাকতে, বড় বোন মেরী বেগম ও নাসির উদ্দিন নিজে আমাকে হলফনামার মাধ্যমে “বীর নিবাস” আমার শ্বশুর বাড়িতে নির্মানের জন্য লিখিত দিয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বে কর্মরত মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর ছেলে, মেয়েরা হলফনামার মাধ্যমে বিউটি হকের শ্বশুর বাড়িতে “বীর নিবাস” নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারন করে দেওয়ার পরেই তা মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়। মন্ত্রনালয় থেকে ওই স্থানেই নির্মানের জন্য অনুমোদন হয়ে আসে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর ছেলে নাসির সেরনিয়াবাত যদি স্থান পরিবর্তন করে আনতে পারে আমরা সেই স্থানেই “বীর নিবাস” নির্মাণ করব।