আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পাঁচ সহপাঠির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ছয় শিক্ষার্থী। এঘটনা নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা একাধিকবার সালিশ বৈঠকে বসলেও অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিচার নিয়ে দেখা দিয়েছে দ্বিধা—বিভক্তি। সম্প্রতি উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র আল মাহামুদ বখতিয়ার, মাহাফুজ হাওলাদার, আকাশ বখতিয়ার, নাইম বখতিয়ার ও জিহাদ বখতিয়ারসহ ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন একই বিদ্যালয়ের সহপাঠী এ্যানি বিশ্বাস, তাইবা সাবরিন, অনামিকা মধু, অনতু হাজরা, ক্যাথরিন বিশ্বাস ও তিথিসহ ৬ ছাত্রী।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে আসা—যাওয়ার পথে ছাত্রীদের উত্যক্ত, প্রেমের প্রস্তাবসহ যৌন হয়রানি করে আসছিল অভিযুক্ত ছাত্ররা। উত্যক্তকারীদের বিচারের দাবীতে নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভুতি ভুষন সরকারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ওই ছয় শিক্ষার্থী। লিখিত অভিযোগের পরে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা রোববার বিকেলে বিদ্যালয়ে সালিশ বৈঠকে বসলেও অভিযুক্তদের বিচার নিয়ে দেখা দিয়েছে দ্বিধা—বিভক্তি। অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ার কারনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না স্কুল কতৃর্পক্ষ।
বিদ্যালয়ে অভিযোগ করার পর থেকে অভিযোগকারী ওই ৬ শিক্ষার্থী নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী এ্যানি বিশ্বাসের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তার চোখে মুখে ভয় ও আতংকের ছাপ দেখা গেছে। সে জানান অভিযুক্ত ছাত্র আমার বোনের মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে (এ্যামি বিশ্বাস চন্দ্রা) আপত্তিজনক কথাবার্তা লিখেছে এবং বিদ্যালয়ে আসা—যাওয়ার পথে প্রায় সময় উত্যক্ত করে। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিযোগকারী শিক্ষার্থী তাইবা সাবরিনের পিতা মো. রিপন বখতিয়ার বলেন, অভিযুক্তদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী করছি। ভবিষৎতে আর কোন বখাটে ছাত্রদের জন্য মেয়েদের স্কুলে আসা—যাওয়া যেন বন্ধ হয়ে না যায়। নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর অভিযুক্ত ছাত্র আল মাহামুদ বখতিয়ার বলেন, আমরা কোন শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করিনি।
কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রী এ্যানি বিশ্বাসের বোনের মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে যা লিখেছি তার জন্য তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক বিভুতি ভুষন সরকার বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে ম্যানেজিং কমিটি সদস্যদের নিয়ে সমাধানের জন্য বসলেও দ্বিধা—বিভক্তির কারনে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। খুব দ্রুত আবার বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে। এঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলমগীর সরদার বলেন, অভিযুক্তদের অভিভাবকদের সামনে বসে তাদের বিচার করা হবে। যাতে ভবিষৎতে আর কোন বখাটে ছাত্র কোন ছাত্রীকে উত্যক্ত করতে না পারে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।