স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রশিক্ষণ না থাকা সত্ত্বেও একই চিকিৎসক দিয়ে এনেস্থিসিয়া ও অপারেশন করানোর পর প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় একটি ক্লিনিক বন্ধ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জরিমানা ও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে গত শুক্রবার গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার রামপুরা গ্রামের প্রসূতি মাসুরা বেগমের অস্ত্রোপচারের জন্য ‘নিরাময় নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ ভর্তি করানো হয়। দুপুর দুইটায় মাসুরা বেগমকে অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।
ক্লিনিক মালিক ডা. আসলামুজ্জামান অস্ত্রোপচার করেন। ১৫ মিনিট পর জন্ম নেওয়া নবজাতককে অপারেশন থিয়েটার থেকে জীবিত বের করা হয়। পৌনে এক ঘণ্টা পর মাসুরা বেগমকে অচেতন অবস্থায় বের করে কেবিনে আনা হয়। দীর্ঘ সময় পরও জ্ঞান না ফেরায় স্বজনদের সন্দেহ হয়।
পরে স্বজনরা গিয়ে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রসূতি মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জানতে পারি। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়।
নিয়মনীতি না মানা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ও সেবার নামে রোগীর সঙ্গে প্রতারণা করায় ভোক্তা সংরক্ষণ আইনে ওই ক্লিনিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চিকিৎসাসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, ‘প্রসূতি মারা যাওয়ার ঘটনায় আমরা ক্লিনিক পরিদর্শন করি। সেখানে দেখি, ক্লিনিক মালিক আসলামুজ্জামান কামাল নিজেই রোগীকে অজ্ঞান ও অস্ত্রোপচার করেন।
তার আসলে এ ধরনের অস্ত্রোপচার করার কোনো এখতিয়ার নেই, যা রোগীদের সাথে প্রতারণার শামিল। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে জেল দেওয়া হয়নি। তবে এক লাখ জরিমানা ও সাময়িকভাবে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া জাহানারা সেবা ক্লিনিকে ডিউটি ডাক্তার অনুপস্থিত, পর্যাপ্ত নার্স না থাকা, ভুয়া ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার অপরাধে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ সময় কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) আরএমও আমিনুল ইসলাম, মো. মাহমুদুল হাসান, সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার এসএম সাকিবুর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন।