পটুয়াখালী প্রতিনিধি : ২৫ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সহসভাপতি মো. সজিব মৃধাকে (৩৫) কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার সময় শহরের কুমারপট্রিস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের ভিতরে এ ঘটনা ঘটেছে।
গুরুতর আহত সজিব মৃধা এ ঘটনার জন্য উপজেলা যুব লীগের সহ—সাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুল ইসলাম (রকি) এবং উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জনি সরদারকে দায়ী করেছেন। আহত সজিব মৃধা অভিযোগ করে বলেন, রকি ও জনি আগে থেকেই তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।
উভয় পক্ষই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মহিববুর রহমানের নৌকা প্রতীকের সমর্থক। তবে সজিবকে কোনোভাবেই রকি ও জনি মানতে পারছিল না। সজিব কখনও দলীয় কার্যালয়ে গেলে নানাভাবে হুমকি—ধমকি দেয়া হতো। তাঁর ওপর হামলা হতে পারে এমন আশংকার কথা তিনি দলের সিনিয়র নেতাদেরকেও জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাতে সজিব নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কাজ শেষ করে পৌর শহরের কুমারপট্রি দলীয় কার্যালয়ে গেলে হামলার শিকার হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সজিব মৃধা আক্ষেপ করে আরও বলেন, যখন রামদা নিয়ে ওরা আমার ওপর হামলা করেছে তখন দলের কার্যালয়ের ভিতর অনেকেই উপস্থিত ছিল। তাঁরা কেউই আমাকে বাঁচাতে চেষ্টা করেনি।
রামদা—ছেনা দিয়ে ওরা আমাকে কুপিয়েছে। হামলাকারীরা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এ হামলায় রকি ও জনির সাথে মুছা, সুমন, মহিবুল্লাহ, মোস্তফাসহ অন্তত ১০—১২ জন সন্ত্রাসী জড়িত ছিল বলে সজিব জানায়।
কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদার গনমাধ্যম কমীর্দের জানান রোববার রাতে আমি বাসায় এসে রাত দশটায় ঘুমাইয়া পড়ি। সোমবার সকালেই এ ঘটনা শুনি। সমস্ত বড় সংগঠনে এরকম ঘটনা ঘটে। নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা নিয়া এ ঘটনা ঘটেছে।
আমরা খোঁজ—খবর নিয়ে এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘সজিবের পিঠে ছুরি বা ধারালো কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ডান পায়ের গোড়ালির ওপরে রামদার কোপ লেগেছে। ডান পায়ের কোপের আঘাতটি গভীর হয়েছে এবং হাঁড় কেটে গেছে। হাঁড় কেটে যাওয়ায় ওই ছেলেটার উন্নত চিকিৎসা দরকার।
এ ছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানেও মারধরের চিহ্ন রয়েছে। মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া আরও বলেন, তাঁকে বরিশাল বা ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার। তাঁর আত্মীয়স্বজন বা শুভাকাংখী কাউকেই খুৃঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়েছি।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ জানান, এ ঘটনার খবর পেয়েই ওই এলাকায় টহলে থাকা আমাদের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার নিকটবর্তী জায়গা থেকে মেহেদী নামে একজন আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কেউই আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি।