More

    উজিরপুরে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া রঙিন হয়েছে গ্রীস্মের প্রকৃতি

    অবশ্যই পরুন

    ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া রঙিন হয়েছে গ্রীস্মের প্রকৃতি। উজিরপুরেও বৈশাখের আকাশে গনগনে সুর্য, কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত বাতাস, ওষ্ঠাগত প্রাণ, মজুরের করুন চাহনিতে ক্লান্তির ছাপ, প্রকৃতি যখন প্রখর রোদে পুড়ছে তখন গ্রীস্মের এই নিষ্প্রাণ রুক্ষতাকে ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরেছে আপন মহিমায়, প্রকৃতি যেন ক্লান্তি ভুলাতে লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে, দেখলে যে কারো চোখে এনে দেয় শিল্পের দ‍্যোতনা।

    ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে -আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে বর্ণে ‘ কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গান কৃষ্ণচূড়ার তাৎপর্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।

    সারা দেশের ন্যায় উজিরপুরের বিভিন্ন স্থানে এই সময়ে চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীস্মের প্রকৃতি, দেখলে মনে হয় বৈশাখের প্রখর রোদ্দুরের উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুস্পরাজি, সবুজ প্রকৃতির মাঝে যেন আগুন ঝড়ছে। গ্রীস্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে, তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথিক পুলকিত নয়নে, অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য।

    এখন লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটে আসছে গাছে গাছে। কৃষ্ণচূড়ার আরেক নাম গুলমোহর তা কম লোকেই জানে কিন্তু কৃষ্ণচূড়া চেনেনা এমন লোক খুঁজে পাওয়া ভার! কৃষ্ণচূড়াকে আমরা সাধারণত লাল রঙে বেশি দেখি, তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন কৃষ্ণচূড়া তিনটি রঙের হয় লাল, হলুদ ও সাদা, আমাদের এলাকায় চাচার লাল কম করে হলেও হলুদ দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু সাদা কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখা মেলে কালেভদ্রে।

    তিন রঙের কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখতে একই রকমের উঁচু গাছে শাখা -প্রশাখার বিস্তার ঘটিয়ে জায়গা দখল করে, তিন রঙের ফুল একই সময় ফোটে। জানা গেছে কৃষ্ণচূড়ার আদিনিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে, এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে, ক‍্যারাবিয়ান অঞ্চল আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ,ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে জন্মে।

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডা দক্ষিণ পশ্চিম ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসের রিও ডি গ্র্যান্ড উপত‍্যাকায় কৃষ্ণচূড়া পাওয়া যায়। বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি ও বহু আন্দোলনের পটভূমির সাথে কৃষ্ণচূড়া গাছের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। ছড়া- কবিতা গানে উপমা হিসেবে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য নানা ভঙ্গিমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

    শোভাবর্ধনকারী এই বৃক্ষটি দেশের গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের মানুষের কাছেও সমান গুরুত্ব বহন করে। শখের বসে এই গাছের কদর থাকলেও এর কাঠ ভালো কোন ব্যবহারে না আসায় তুলনামূলক কম দামি হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে এ গাছ রোপনে আগ্রহ কম।

    কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ‘ গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে, তোমার উত্তরী কর্নে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি ‘ আজ টিকে আছে নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে। বৃক্ষ নিধনের শিকার হয়ে আমাদের এলাকায় দিনে দিনে কমে যাচ্ছে রঙিন এই গাছ। পরিবেশবাদীদের ধারণা আস্তে আস্তে এই গাছ বিলুপ্তির পথে। প্রকৃতি ও সৌন্দর্য রক্ষায় বেশি করে এই গাছ রোপণের আহ্বান।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    কক্সবাজারে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে এক পরিবারের ৫ জন নিহত, আহত ৪

    কক্সবাজারের চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চালকসহ আরও...