More

    ডায়াবেটিস রোগ এবং চোখের ওপর প্রভাব

    অবশ্যই পরুন

    ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে এবং চক্ষু, কিডনি ও হার্টের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে থাকে। চোখের মতো সংবেদনশীল অঙ্গটির ওপর এমন প্রভাব ফেলে যে, পরবর্তী সময়ে অনেকেই দৃষ্টিহীন হয়ে যায়।

    ডায়াবেটিস রোগ যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে চোখের পাতা থেকে চোখের পর্দা বা রেটিনা দৃষ্টির স্থান (ম্যাকুলা) ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে চোখে নানা রকম প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে এবং মানুষ দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে।

    চোখের পাতায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্যালাজিয়ন (অঞ্জনি), স্টাই, ব্লেফারাইটিস রোগ বারবার হতে দেখা যায়। চোখে বারবার এ রোগগুলো হলে দৃষ্টির ক্ষতি হয়। কোনো কোনো রোগীর বারবার চোখ ওঠা রোগ হতেও দেখা যায়। চোখের আবরণ (স্কেলেরায়) প্রদাহ হয়ে নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। চোখের মণিতে ক্ষতের সৃষ্টি হলে তা সহজে আরোগ্য লাভ করতে বিলম্ব হয়, যা পরবর্তী সময়ে ক্ষত সৃষ্টির মাধ্যমে সাদা স্পট পড়ে এবং দৃষ্টিস্বল্পতার কারণ হিসেবে দেখা দেয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগ দ্রুত চোখের লেন্সকে ঘোলা করে ছানিতে রূপান্তর করে ফেলে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করলে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয় না।

    দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস রোগীর লেন্সের পেছনে জেলির মতো যে ভিট্রিয়াস নামক পদার্থ থাকে, তাতে রক্তক্ষরণ হয়ে দৃষ্টিহানি ঘটায়। সবচেয়ে বেশি যে সমস্যার সৃষ্টি করে তা হলো, চোখের দৃষ্টির স্থানে ম্যাকুলোপ্যাথি হয়ে দ্রুত দৃষ্টিহানি ঘটায়। দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগের কারণে চোখের পর্দা বা রেটিনায় রেটিনোপ্যাথি হয়ে থাকে। রেটিনোপ্যাথি হলে চোখের পর্দার রক্তনালি স্বাভাবিকতা হারায়, রক্তনালি দানাদানা হতে থাকে (মাইক্রোঅ্যানিউরিজম), চোখের পর্দায় রক্তক্ষরণ, হার্ড এবং সফট এক্সজুডেট হয়ে থাকে, যা দৃষ্টির ক্ষতি করে, এমনকি রেটিনা ছিঁড়ে (ডিটাসমেন্ট) যেতে দেখা যায়।

    অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগের কারণে রিফ্র্যাকটিভ ইরর বা দৃষ্টি স্বল্পতাজনিত রোগ হয়। ডায়াবেটিক রোগীদের চশমার পাওয়ার বারবার পরিবর্তন করার প্রয়োজন দেখা দেয়। চোখ ভালো রাখতে হলে অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বর্তমানে অনেক আধুনিক ওষুধ বের হয়েছে, যা দ্রুত ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে। তবে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও ব্যায়াম তথা হাঁটাচলা করা আবশ্যক।

    সর্বোপরি চোখ ভালো রাখতে হলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বছরে অন্তত দু-একবার চক্ষু পরীক্ষা করতে হবে। মনে রাখতে হবে ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম’।

    লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    শের- ই- বাংলার ১৫২তম শুভ জন্মদিন উদযাপন

    রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি :বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ও ঢাকায় বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাঙালী জাতীয়তাবাদের অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা একে...