জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই রেভল্যুশনারি এলায়েন্স’ নামের একটি সংগঠন। তাদের প্রকাশিত তালিকায় শহীদদের সংখ্যা ৯১৪ বলে তুলে ধরা হয়েছে।
এ ছাড়া আরও ৬০০–এর বেশি শহীদের তথ্য তাদের কাছে রয়েছে বলেও দাবি করেছে সংগঠনটি।
শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদদের সংখ্যা ও তালিকা প্রকাশ করে করে সংগঠনটি।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হান, মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আহমদ সামরান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীসহ দেশের মোট ৫৪টির বেশি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে পুলিশ এবং এপিবিএনের গুলিতে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ হতাহত হয়। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হতাহতের ঘটনা ঘটে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের গুলিতে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গুলিতে। সংবাদ সম্মেলন থেকে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর পদত্যাগ দাবি করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ বলেন, জুলাই বিপ্লবে যে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, তার বিচার আজও হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে ন্যূনতম পদক্ষেপও নেয়নি। তারা পারত, কিন্তু করেনি। বিচারের উদ্দেশ্য আদৌ ছিল কি না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। কিন্তু সত্য হলো, শহীদদের রক্তের ন্যূনতম মর্যাদাটুকু পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার এক ভয়ংকর উদাহরণ তৈরি করে গেল,বাংলাদেশে গণহত্যার বিচার হয় না। এই দেশে মানুষকে হত্যা করা যায়, হাজার হাজার প্রাণ কেড়ে নেওয়া যায়—কিন্তু আসামিরা নিরাপদে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে, মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়াতে পারে।
‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকারি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত শহীদ এবং এর বাইরে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত শহীদদের অন্তর্ভুক্ত করে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গেজেটের বাইরে অনেকেই রয়েছেন, যাদের এখনো সরকার শহীদ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেনি। তবে তাদের এই তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয় উল্লেখ করে বলা হয়, বর্তমানে ৬০০–এর বেশি শহীদের আবেদন ঝুলে আছে।
তালিকাটি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে করার কথা জানিয়েছে ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’। এর মধ্যে বিভিন্ন এনজিওর তথ্য; জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা; এলাকাভিত্তিক তালিকা; বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থ; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং শহীদ পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।