More

    পিরোজপুরে বিদ্যালয়ের শতাধিক বেঞ্চ বিক্রি করলেন স্বেচ্ছাসেবকদল নেতারা

    অবশ্যই পরুন

    অনলাইন ডেস্ক: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে টেন্ডার ছাড়াই সহকারি শিক্ষকের যোগসাজসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজা ভেঙে জোর করে শতাধিক পুরাতন বেঞ্চ কেজি দরে বিক্রি করে টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিলেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা। বিষয়টি রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নিশ্চিত করেছেন ২৪ নং ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিগার সুলতানা।

    সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গত বুধবার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল সিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহিন বয়াতি ও ইমাম শিকদার চন্ডিপুরের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী জাকির হোসেন গাজীর কাছে বেঞ্চগুলো বিক্রি করেন। শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী জাকির গাজীর গুদামে ওই বেঞ্চগুলো স্তুপ করে রাখে হয়েছে।

    এব্যাপারে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মোঃ জাকির হোসেন গাজী জানান, ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন লোহার বেঞ্চগুলো স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা সোহেল শিকদার, ইমাম শিকদার ও শাহীন বয়াতীর কাছ থেকে ৪৯০ কেজি ৩৯.৫০ টাকা দরে মোট ১৯৩৫৫ টাকায় ক্রয় করেছি। একটি চুক্তিপত্রে ওই তিনজন নেতার নাম স্বাক্ষর ও মোবাইল নম্বর দেখে আমি বেঞ্চগুলো ক্রয় করি। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল সিকদার জানান, আমি বিদ্যালয়ের বেঞ্চ নেইনি।

    সামনে আমাদের কমিটি হবে। তাই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিগার সুলতানা জানান, আমি কোন বেঞ্চ বিক্রি করিনি। স্কুলের পরিত্যক্ত ভবনে পুরাতন ও অপ্রয়োজনীয় বেঞ্চগুলো রাখা ছিল। যেগুলো আমাদের প্রয়োজন সেগুলো রেখে বাকি বেঞ্চগুলো তালাবদ্ধ করে রাখি। কিন্তু স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা সোহেল শিকদার, ইমাম শিকদার ও শাহীন বয়াতী দরজা ভেঙে জোর করে বেঞ্চগুলো নিয়ে যায়।

    বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ ফরিদ আহম্মেদকে জানালে সে আমাকে বেঞ্চগুলো ওই ৩ নেতাদের দিয়ে দিতে বলেন। তিনি আরও বলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমাকে বলেছে এ বিষয় কেউ জিজ্ঞেস করলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ ফরিদ আহম্মেদ জানান, ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মাওলানা জসিম উদ্দিন বিএনপি অফিসে বসে আমাকে বলেন, ওই বেঞ্চগুলো আমাদের কাজে লাগবে না ওগুলো নিলে কোন সমস্যা নাই।

    তবে যারা নিউজ করেছে আমি সব জানি। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। সহকারী শিক্ষক মাওলানা জসিম উদ্দিন জানান, আমি বেঞ্চ বিক্রি করিনি। তবে উপজেলা অফিসে বসে বিএনপির সভাপতিকে পুরাতন বেঞ্চগুলো নিতে বলেছিলাম। আসলে আমি না বুজে একথা তাকে বলেছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল হাকিম জানান, শুধু একটি পরিত্যক্ত ভবন ও কয়েকটি গাছের নিলাম হয়েছে। কোন বেঞ্চ বিক্রির নিলাম হয়নি। পুরাতন বেঞ্চ বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই বা কেউ অনুমতি নেয়নি।

    বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান-বিন-মুহাম্মদ আলী জানান, পুরাতন বেঞ্চ বিক্রির নিলাম হয়নি। বেঞ্চ বিক্রির বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনা সত্য প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, গত (৪ আগষ্ট) ২৪ নং ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১টি পরিত্যক্ত ভবন, ৮টি মেহগনি ও ৬টি চাম্বল গাছের নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ১১ আগষ্ট নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। অত্র স্কুলের পরিত্যক্ত ভবনের কক্ষে পুরাতন শতাধিক লোহার বেঞ্চ রাখা ছিল।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে আবাসিক হোটেল পপুলার থেকে ১৬ নারী-পুরুষ আটক

    বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে ১৬ নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে নগর‌ীর পোর্ট...