অনলাইন ডেস্ক: ভোলায় আলোচিত মাদ্রাসাশিক্ষক ও মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল হক নোমানী হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পর ১৩ সেপ্টেম্বর এ ঘটনা উন্মোচন করে পুলিশ। আমিনুল হক নোমানীকে তাঁর ছেলেই হত্যা করেছে।
ছেলে রেদোয়ান হক (১৭) পুলিশের হাতে আটকের পর হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রেদোয়ান। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক জানান, ৬ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় ভোলা সদর থানাধীন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে সদর থানা-পুলিশ খবর পেয়ে সদর উপজেলার চরনোয়াবাদ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আমিনুল হক ওরফে নোমানী (৪৩) তাঁর নিজ বসতঘরে দুর্বৃত্ত দ্বারা ছুরিকাঘাতে জখম হলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনার পর থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একাধিক দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তকাজ শুরু করে।
তারা প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়ে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে। পরে ভিকটিমের স্ত্রী হালিমা বিনতে কামাল বাদী হয়ে ৭ সেপ্টেম্বর ভোলা সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা নম্বর-১৩। এরপর থানা ও ডিবি পুলিশের একাধিক দল খুনের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য সম্ভাব্য সব বিষয় সামনে রেখে তদন্তকাজ শুরু করে।
একপর্যায়ে ১২ সেপ্টেম্বর সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে ভিকটিমের বড় ছেলে মো. রেদোয়ানুল হককে তাঁর নিজ বসতঘর থেকে ডিবি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রেদোয়ানুল হক বাবাকে হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করেন এবং তাঁর দেখানোমতে ভিকটিমের বাসার পেছনে খালের পাশ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।
বর্তমানে মামলাটি ভোলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও জেলা গোয়েন্দা শাখায় তদন্তাধীন। প্রসঙ্গত, ৬ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের চরনোয়াবাদ এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ ঘরে ঢুকে মাদ্রাসাশিক্ষক ও মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল হক নোমানীকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।