আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মৎস্য অফিসকে ঘিরে অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। নদীতে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকার থেকে শুরু করে কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পে টেন্ডারবিহীন কাজ সবকিছু নিয়েই উঠেছে একের পর এক অভিযোগ। অভিযোগকারীদের ভাষ্য, যথাযথ অভিযান ও নজরদারির অভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে।
আর টেন্ডার ছাড়াই উধাও কোটি টাকা! উপজেলার বিভিন্ন নদী ও জলাশয়ে দিন—রাত নির্বিঘ্নে চলছে অবৈধ কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারি জাল, ভেসাল জাল, গরা পাটা, চরঘের, এমনকি নেট টেনে মাছ ধরা। ঘূর্ণিজালের মতো নিষিদ্ধ সরঞ্জাম দিয়েও মাছ শিকার চলছে প্রকাশ্যে। অথচ মৎস্য অফিসের অভিযানের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয় মৎস্য চাষী মিনাল সমদ্দার জানান, অভিযানের আগাম খবর ফোনে পেঁৗছে যাওয়ায় অবৈধ জাল আগে ভাগেই গুটিয়ে ফেলা হয়।
এদিকে সরকার দেশীয় মাছ ও শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পসহ একাধিক প্রকল্পে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও এর সঠিক ব্যবহার নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রকল্পের নামমাত্র কাজ শেষ হলেও স্থানীয়রা জানেন না, প্রকল্পের প্রকৃত বাজেট কত। এমনকি প্রকল্প সদস্যদেরও এ বিষয়ে ধারণা নেই। সরকার প্রতিবছর কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও তার সঠিক ব্যবহার ও জবাবদিহি কতটা নিশ্চিত হচ্ছে, তা এখন বড় প্রশ্ন।
স্থানীয়দের দাবি, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রুখতে মৎস্য অফিসের ওপর কড়া নজরদারি প্রয়োজন। তা না হলে একদিকে যেমন বিলুপ্ত হবে দেশীয় প্রজাতির মাছ, অন্যদিকে প্রকল্পের অর্থ চলে যাবে কতিপয় প্রভাবশালী মহলের পকেটে। সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো, উপজেলা মৎস্য অফিসে কখনো টেন্ডার হয়নি, এমন তথ্য স্বীকার করেছেন বর্তমান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মানিক মল্লিক নিজেই। এতে দুর্নীতির আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, টেন্ডার ছাড়া নিজেদের পছন্দমতো ঠিকাদার দিয়ে কাজ করিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বণিক জানিয়েছেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া না হওয়া বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই তদন্তের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অভিযানে কোনো ধরনের অনিয়ম পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।