More

    ডিম ছাড়তে নদীতে আসছে ইলিশ, নিষেধাজ্ঞা শুরু ৪ অক্টোবর

    অবশ্যই পরুন

    ডিম ছাড়তে নদীতে আসতে শুরু করেছে ইলিশ মাছ। জেলেদের জালেও ধরা পড়ছে কিছু কিছু। এর প্রভাবে স্থানীয় বাজারে মাছের দামও কিছুটা কমেছে বলে ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানান।

    বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, প্রজনন মৌসুমের কারণে নদীতে ইলিশ মাছ আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে ছোট সাইজের মাছ আসছে। সমুদ্র থেকে মাছ উঠতে শুরু করেছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে আরো মাছ আসবে। তবে বড় সাইজের মাছ একটু পরে আসা শুরু করবে। তিনি বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় এবার ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শিকার নিষেধাজ্ঞার সময় শুরু হবে।

    ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত নদীতে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকবে। ইলিশ মাছের প্রজনন মৌসুমের কারণে নদীতে মাছ আসায় জেলেরাও খুশি। নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। মেঘনা নদীর জেলে হিজলার ধুলখোলা বতুয়া গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব হোসেন বেপারী বলেন, “কয়েকদিন ধরে নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

    আগে দিনভর জাল ফেলে ৩০০-৪০০ টাকার মাছ পাওয়া যেত। এখন ২০০০-৩০০০ টাকা মাছ পাওয়া যায়। বর্তমানে বড় মাছ উঠে না। তবু মাছ তো পাওয়া যাচ্ছে। আগে তো সারাদিনের তেলের খরচও উঠত না।” মান্দ্রা চর কুশরিয়ার জেলে রিয়াজ মোল্লা বলেন, “দুই থেকে তিন দিন ধরে নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বড় সাইজের মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। ছোট সাইজের মাছের সিংহভাগের পেটে ডিম রয়েছে।” নগরীর পোর্ট রোড মোকামে তিন দিন ধরে ইলিশ মাছের আধিক্য দেখা গেছে।

    বাজারে বেশি মাছ আসায় খুশি শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীরা। ক্ষুদ্র মাছ বিক্রেতা মো. বশির বলেন, “এক মাস ধরে বাজার কিংবা জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনে বিক্রি করার মত সার্মথ্য ছিল না। কারণ, জেলেরা যে মাছ ধরত, তার পরিমাণ ছিল খুবই কম। দাম এত বেশি ছিল, যা কিনে বিক্রি করা যেত না। কারণ, বেশি দাম দিয়ে কেউ মাছ কিনতে চায় না। দুই-তিন ধরে একটু মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এ বছরে এখন সবচেয়ে কম দামে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে। ভারতে যদি না যেত আরও কম দাম হত।”

    বশির বলেন, মঙ্গলবার ইলিশ বিক্রি করে ভালোই লাভ হয়েছে। এরকম যদি সবসময় হত তাহলে তাদের আর কষ্ট থাকত না। পোর্ট রোডের আড়তদার আকতার হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে বাজারে একটু ইলিশ মাছ ওঠছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৪০-৫০ মণ মাছ বিক্রি হত; সেখানে এখন ১৫০-২০০ মণ বিক্রি হয়।

    তিনি জানান, মঙ্গলবার পোর্ট রোড বাজারে দেড় কেজি আকারের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি দুই হাজার ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এক কেজি ২০০ গ্রাম আকারের দুই হাজার ৩০০ টাকা কেজি, এক কেজি আকারের দুই হাজার ১৫০ টাকা, এলসি এক হাজার ৭৫০ টাকা, আধা কেজি আকারের এক হাজার ৪৫০ টাকা, ৪০০ গ্রাম আকারের এক হাজার ২০০ টাকা এবং ৩০০ গ্রাম আকারের প্রতি কেজি ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

    পোর্ট রোডে একটু নরম মাছ কেটে লবণ দেওয়া হয়। ওই কাটা মাছের ডিম সংগ্রহ করেন আকতার হোসেন। পরে ওই ডিম চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেন। আকতার হোসেন বলেন, দুই দিনে ৫০ কেজি ডিম পাঠিয়েছেন। আরও ২৫ কেজি প্যাকেট করেছেন। সেটা মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামে পাঠাবেন।

    তিনি দুই হাজার টাকা কেজি দরে ডিম কিনেন। চট্টগ্রামে প্রতি কেজি দুই হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। মাছ বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে জেলেদের জালে ভালো ইলিশ মাছ পড়ছে। এতে দামও কমেছে। কয়েক দিন আগে কেজি সাইজের ইলিশ মাছ দুই ৬০০ টাকায় বিক্রি হত।

    সেই মাছ এখন দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজির নিচের মাছ দুই ২০০ থেকে কমে এখন এক হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বরিশাল জেলা মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, জেলার ১০ উপজেলায় ৮৬ হাজার ১৭৭ জন জেলে রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে চার লাখ টন ইলিশ মাছ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলায় ১৪৩টি ঘাটে ইলিশ বিক্রি হয়।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    সাংবাদিক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীরকে সংবর্ধনা প্রদান

    নিজস্ব সংবাদদাতা: জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, মাদারীপুর জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ত্রৈমাসিক আলোচনা সভা ও এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।...