More

    ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার খবরে উপকূলে অস্থিরতা

    অবশ্যই পরুন

    ভোলার মনপুরায় বিগত বছরে এই সময়ে ইলিশের ছড়াছড়ি থাকলেও এবার জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার ৫০ হাজার জেলে পরিবার। এদিকে ইলিশসহ মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এতেই উপজেলাজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করেছে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের মাঝে। পরিবারে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া।

    জানা গেছে, গত বছর ১২ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞার সময় শুরু হলেও এবার ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ নিধন ও সংরক্ষণ নিষেধ করেছে সরকার। তবে এই বছরের সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবর্তনের দাবি করছেন জেলে ও মৎস্য ব্যসায়ীরা।

    জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, ভরা মৌসুমে নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা পড়েনি। খালি হাতে ফিরছে বেশিরভাগ জেলে। যখনি নদী ও সাগরে ইলিশ দেখা মিলছে, তখনই সরকার মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবর্তনের দাবি করেন তারা।

    তারা আরও জানান, প্রতি বছর বাংলাদেশে যখন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তখন ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ ইলিশ শিকার করেন। তাই তারা ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণের দাবি করেন।

    জনতা বাজার এলাকার সমুদ্রগামী টলারের জেলে রফিক জানান, গত দুই বছর নিষেধাজ্ঞা পালন করতে গিয়ে তার শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়। এছাড়াও এই বছরে ইলিশ শিকার করে যা আয় করছেন তা ঋণ পরিশোধ করে হাতে কিছু থাকছে না। এতে তার সংসারে অভাব ছাড়ছে না।

    মাস্টারহাট এলাকার জেলে হোসেন মাঝি জানান, কিস্তির বোঝা মাথায় নিয়ে প্রতিনিয়ত মেঘনায় জাল ফেলে আসছি। কোনো দিন খালি হাতে ফিরেছি, আবার কোনো দিন দু-একটা ইলিশ নিয়ে ফিরেছি। এখন যখন আজকাল কমবেশি ইলিশ পড়তে শুরু করেছে, শুনছি সরকার মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে করে দেনা কীভাবে মিটাব আবার নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবারের খরচ কীভাবে জোগাড় করব তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

    হাজিরহাট ঘাটের মাঝি আবব্দুর রব, মিজান, সফিজলসহ অনেক জেলেরা অভিযোগ করেন, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি সাহায্য তারা পান না। এতে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।

    মৎস্য ব্যবসায়ী হাবিব, হেলাল ও লিটন শাহ জানান, গত ২০ বছর ধরে ইলিশের ব্যবসা করে আসছি। যখন জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়া শুরু করছে তখনই সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দিয়েছে। তবে গত বছর ১২ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই বছর ৩ অক্টোবর কেন দেওয়া হলো তা তারা বুঝতে পারছে না। তাই তারা নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবর্তনের দাবি করছেন।

    এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা না থাকায় উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী মো. মনির জানান, জেলেরা নিষেধাজ্ঞা পেছানোর দাবি করেছেন। তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা লালমোহন মৎস্য কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

    মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলী আখতার জানান, নদীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ইলিশের সংরক্ষণ কমে গেছে। তবে মা ইলিশ রক্ষা করা গেলে আগামীতে জেলেদের জালে ইলিশের দেখা মিলবে। তাই সরকারের নিষেধাজ্ঞার যাতে সঠিকভাবে পালন করা হয় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় আগামী ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ২২ দিনের বিশেষ অভিযান চালানো হবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ থাকবে। এ অভিযানে মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশ নেবে।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    যাত্রীছাউনি এখন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার দোকানের বারান্দা

    পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার একটি যাত্রীছাউনি এখন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার দোকান ঘরের বারান্দা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে...