প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বরিশাল নগরের পোর্ট রোড বাজারে বসেছে ইলিশ মেলা। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার শুরুর আগের দিন বসে এ মেলা। শুক্রবার বিকাল থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে জমে ওঠে ইলিশের বেচাকেনা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের চেয়ে মোকামে এবারে ইলিশ মাছ কম উঠেছে। তবে দাম গত কয়েকদিনের চেয়ে একটু কম ছিল। তাই মাছ কিনতে ক্রেতারা ভিড় করেছেন বাজারে। ক্রেতাদের ভিড়ে পা ফেলারও জায়গা নেই।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, প্রধান প্রজনন মৌসুম এগিয়ে এনে এবার ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়, বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। তাই বাজারের আড়তদারের মজুত করা মাছসহ নদী ও সাগরে শিকার করা ইলিশ দুপুরের পর থেকে বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
মাছ বিক্রেতার মো. ফজলু বলেন, “নিষেধাজ্ঞা শুরু আগে আজকে রাতভর বেচাবিক্রি হবে। তাই বাজারে বেশি ইলিশ মাছ উঠেছে। মাছের দামও কম। শেষ দিনে এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন। তারা এখান থেকে মাছ কিনে বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান। একদিনে এ বাজারে অন্তত দেড় হাজার মণ মাছ বেচা-বিক্রি হবে।” আড়তদার ইয়ার শিকদার বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বাজারে মাছ কম। কারণ গত কয়েকদিন আবহাওয়া খারাপ ছিল; যা উঠেছে দাম স্বাভাবিক।
সামনে লক্ষীপূজা রয়েছে। তাই মাছের চাহিদা একটু বেশি। আড়তদার আকতার হোসেন বলেন, দেড় কেজি আকারের মাছ দুই হাজার ৫০০ টাকা, কেজি আকারের মাছ দুই হাজার ১০০ টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের মাছ এক হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম এক হাজার ৬০০, ৪০০ গ্রাম এক হাজার ৪০০ টাকা, ৩০০ গ্রাম আকারের মাছ এক হাজার ৫০ টাকা। দাম কমলে ক্রেতা বেশি আসবে। আর বেশি হলে ক্রেতা কমে যাবে। মাছ কিনে খুশি ক্রেতা জাকিয়া বেগম।
তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে যে মাছের দাম কেজি প্রতি দুই হাজার ১০০ টাকা ছিল; আজ সেই মাছ এক হাজার ৯০০ টাকা দরে কিনেছি।” জাহানারা বেগম নামের আরেক ক্রেতা বাজারে ঘুরে ঘুরে মাছ দেখছিলেন। তিনি বলেন, “প্রতিবছর নিষেধাজ্ঞার শুরু আগের দিন এখানে ইলিশ মাছের মেলা বসে।
সেই জন্য দেখতে এসেছি। দরদাম পছন্দ হলে কিছু মাছ কিনব।” বরিশাল মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, এ জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে ৮৫ হাজার ১৭৭ জন। এর মধ্যে প্রধান ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সহায়তার জন্য নিবন্ধিত ৭৫ হাজার ৪৩ জেলেকে সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।