বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমিশন গঠন করবে বিএনপি। মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এসে উপস্থিত হয়েছেন।
তারেক রহমান বলেন, জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে অবশ্যই রাষ্ট্রের সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বাড়ানো কিংবা চাকরি স্থায়ী করা কিংবা জাতীয়করণের বিষয়টি ইতিবাচক বিবেচনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করব। একই সঙ্গে প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলামকে ব্যবহারিক এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রধান করে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে শিক্ষা সংস্কার কমিশনও আমরা গঠন করতে চাই। একই সঙ্গে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য শিক্ষা সংস্কার কমিশন করবে দলটি।
নৈতিকতা এবং ধর্মীয়-সামাজিক মূল্যবোধের আলোকে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ না করা গেলে বিশ্বে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে জানান তারেক রহমান।
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরি জাতীয়করণ, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা ব্যবস্থায় পক্ষপাতিত্ব বাতিল ও শর্তবিহীন নিবন্ধনের দাবিতে এ শিক্ষক সমাবেশ করছে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।
তারেক রহমান বলেন, দেশের শিক্ষকদের আর্থিক দিক থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সামাজিক সম্মান নিশ্চিত করে প্রতিযোগিতামূলক করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা আছে। শিক্ষকতা পেশা কখনো উপায়হীন বিকল্প বা সাধারণ চাকরির মতো হতে পারে না। সবচেয়ে মেধাবী মানুষ যেন শিক্ষকতা পেশাকে প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে বেছে নিতে পারে সে বিষয়ে বিএনপি পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজরা বিত্তবান হলে রাষ্ট্র ও সমাজের ভাবমূর্তি কমে কিন্তু সমাজে শিক্ষকদের সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকলে সমাজের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পায়। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দুর্নীতি নামক একটি ব্যাধি রয়েছে। সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় শিক্ষকরা সামাজিক বিপ্লব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন। আমি মনে করি এ ধরনের রাষ্ট্রীয় দিবসগুলোতে আমন্ত্রিত অতিথি তালিকায় অবশ্যই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের একজন করে শিক্ষক আমন্ত্রণ জানানো অত্যন্ত জরুরি। কারণ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় শিক্ষকদের দেখলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি।
শিক্ষকদের সকল ন্যায্য দাবির সঙ্গে বিএনপি নীতিগতভাবে একমত জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক সংস্কার কিংবা নাগরিক উন্নয়নে আমরা যত উদ্যোগই করি না কেন— কোনো শিক্ষা ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ এবং শিক্ষকদের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জ্ঞান ও মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র ও সরকার গঠনে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি আপনাদের সমর্থন ও সহযোগিতা চায়।