More

    বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষকদের জাতীয়করণে হবে উচ্চ কমিশন

    অবশ্যই পরুন

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজে শিক্ষকদের সম্মান এবং মর্যাদার সঙ্গে রাষ্ট্রের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি জড়িত। দুর্নীতিবাজরা বিত্তবান হলে রাষ্ট্রের ও সমাজের ভাবমূর্তি কমে আর সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকলে ভাবমূর্তি বাড়ে। তিনি বলেন, বিএনপি আবারও রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বাড়ানো কিংবা চাকরি স্থায়ীকরণ কিংবা জাতীয়করণে উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠন করবে।

    গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে ‘শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের’ মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া।

    প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুগিসউদ্দিন চৌধুরীসহ বিভিন্ন জেলার আগত শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাব্যবস্থায় পক্ষপাতিত্ব বাতিল ও শর্তবিহীন নিবন্ধনের দাবিতে শিক্ষক মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অতীতের ভালো দৃষ্টান্তগুলো থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন আর খারাপ দৃষ্টান্তগুলো বর্জনের মধ্য দিয়ে একটি সমৃদ্ধ সুন্দর নিরাপদ মানবিক বাংলাদেশ গড়ার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নই হোক আমাদের এই সময়ের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, বিশ্ব এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগে প্রবেশ করেছে। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে সমান এবং মর্যাদার সঙ্গে একটি প্রভাবশালী জাতি রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকাই আমাদের সামনে এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

    এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের অর্থ-বিত্তে, মেধা-মননে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হতেই হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজ। দেশের শিক্ষকগণই হচ্ছেন জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র-সমাজ গড়ার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। সুতরাং এই হাতিয়ার যদি দুর্বল হয় তাহলে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো সম্ভব নয়

    তারেক রহমান বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে নিজেকে একজন রোল মডেল হিসেবে শিক্ষার্থীদের সামনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উপস্থাপন করতে পারেন সে ধরনের শিক্ষাব্যবস্থাপনা প্রণয়নে বিএনপি বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। বিএনপির কর্মপরিকল্পনায় শিক্ষকদের আর্থিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছি। দেশের শিক্ষক সমাজের বিশেষ করে স্কুল-মাদরাসার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং সামাজিক সম্মান সমুন্নত করে শিক্ষকতা পেশাকে সুযোগ এবং সম্মানের দিক থেকে প্রতিযোগিতামূলক করে গড়ে তোলা প্রয়োজন।

    তিনি বলেন, শিক্ষকতা পেশা কখনোই ‘উপায়হীন বিকল্প’ কিংবা একটি সাধারণ চাকরির মতো হতে পারে না। বরং, শিক্ষা-দীক্ষায় সবচেয়ে মেধাবী মানুষটি যাতে কর্মজীবনে প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিএনপি শিক্ষক নিয়োগ এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে সেভাবেই ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা এবং উপায় নিয়ে কাজ করছে।

    তিনি বলেন, শিক্ষকদের নিয়ে আমি আমার একটি পরিকল্পনার কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কিংবা বিজয় দিবসসহ প্রতিবছর বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন। শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন।

    আমি মনে করি, এ ধরনের জাতীয় দিবসগুলোতে আমন্ত্রিতদের তালিকায় বাধ্যতামূলকভাবে অবশ্যই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের কমপক্ষে একজন করে শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো জরুরি। তারেক রহমান বলেন, এটি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বা রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম পুনর্মূল্যায়ন করে রাষ্ট্র ও সমাজে শিক্ষা ও শিক্ষকের মর্যাদা সমুন্নত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তাদের ‘রোল মডেল’ শিক্ষকদের সম্মানজনক অবস্থান এবং বিচরণ দেখতে পেলে সেটি অবশ্যই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনোজগতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এই সমাবেশে আপনাদের অনেকের বক্তব্যে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের প্রসঙ্গ এসেছে।

    কেউ কেউ আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার কথা বলেছেন। এ ছাড়াও আপনাদের এ সংগঠনের বাইরেও বেসরকারি শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি রয়েছে। দেশের একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে অবশ্যই একমত। তারেক রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্র-রাজনীতি এবং সরকারের উন্নয়নে বিএনপির গৃহীত সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। প্রয়োজন দেশের সবচেয়ে সচেতন অংশ শিক্ষকদের সমর্থন। একটি জ্ঞান ও মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সরকার গঠনে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি আপনাদের সমর্থন ও সহায়তা চায়।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    এখন মন খারাপ হয় না পলকের, লড়তে চান ভোটে

    গত বছরের ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।...