ঝালকাঠি সদর উপজেলার রমজানকাঠী কারিগরি ও কৃষি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পীযুষ কান্তি মণ্ডলকে (৭৬) লাঞ্ছিত করে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল সিকদারের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে এ ঘটনায় ঝালকাঠি সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৩ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে বিএনপি নেতা জামাল সিকদারের নেতৃত্বে ২০–৩০ জন লোক কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তারা অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন ক্লাসরুমে গিয়ে শিক্ষক, কর্মচারী ও উপস্থিত কয়েকজনের কাছ থেকে দুটি সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন। অধ্যক্ষ দাবি করেন, তিনি স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে জামাল সিকদার ও তার সহযোগীরা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ভয়ভীতি দেখান এবং শেষে জোরপূর্বক স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন।
তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ওই সাদা কাগজগুলো পরবর্তীতে অনৈতিক বা বেআইনি কাজে ব্যবহার হতে পারে, যা কলেজের সুনাম ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তিনি বিষয়টি থানায় নথিভুক্ত করেছেন বলে জানান। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রিয়াজুল আমিন ওরফে জামাল সিকদার বলেন, অধ্যক্ষের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আমরা সেদিন এলাকাবাসীদের নিয়ে কলেজে শিক্ষা উন্নয়ন কমিটি বাতিলের দাবিতে একটি প্রতিবাদ সভা করেছিলাম। কারণ কমিটিতে বিতর্কিত লোকজন রয়েছে। রমজানকাঠী কারিগরি ও কৃষি কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, একজন শিক্ষক ও অধ্যক্ষকে এভাবে অপদস্থ করা এবং জোরপূর্বক স্বাক্ষর করানো নিন্দনীয় ও লজ্জাজনক।
প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কেউ যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকা জরুরি। সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোকন মল্লিক বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আমাদের কাছে কোনো অভিযোগও আসেনি।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, অধ্যক্ষের লিখিত আবেদন আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।