রাজধানীর গুলিস্তানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে জনতা গুলিস্তানে সমবেত হয়ে দলটির অফিসে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রশিবিরের কর্মীরা ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিতে দিতে কার্যালয়ের সামনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এর আগে, শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি প্রতিহত করতে দুপুরের দিকে গুলিস্তানে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা।
সেসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের ব্যানারসহ নেতা-কর্মীদের মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা ও হাতে লাঠি নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল সংগঠনের নাম ও কর্মসূচির আহ্বান।
গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। এরপর ভবনটি কয়েক মাস পরিত্যক্ত থাকার পর ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের’ পক্ষের শক্তিগুলো সেখানে স্থাপন করে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’।
এদিকে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে। আগামী ১৭ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১২টা ৯ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই তারিখ নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তবে সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে ইতোমধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
