More

    অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক আগৈলঝাড়ার পিআইও অয়ন সাহা!

    অবশ্যই পরুন

    আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অয়ন সাহা যেন দুর্নীতির বরপুত্র হয়ে উঠেছেন। প্রতিটি প্রকল্প থেকে ঘুষ নিলেও সব সময় ধরাছেঁায়ার বাইরেই থাকছেন এ কর্মকর্তা। দুর্নীতির টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের হরিসভায় কোটি টাকা খরচ করে ডুপ্লেস্ক তিনতলা ভবন নির্মাণ করেছেন।

    রয়েছে তার নামে বে— নামে অঢেল সম্পত্তি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ফরিদপুরের হরিসভায় বাড়ি অয়ন সাহার। তার বাবা অরুপ কুমার সাহা ব্যবসা করে কোন ভাবে সংসার চালাতেন। সন্তান অয়ন সাহা চাকুরিতে যোগদানের সাথে সাথেই ভাগ্য বদলে যায় এই পরিবারের। গ্রামের বাড়িতে কোটি টাকা খরচ করে ডুপ্লেস্ক তিনতলা ভবন নির্মাণ করেছেন অয়ন সাহা।

    অয়ন সাহার সাবেক কর্মস্থল দুই উপজেলা সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুই উপজেলা থেকে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করে আত্মসাৎ করেন তিনি। এমনকি সাবেক উপজেলা বরিশালের বানারীপাড়ায় চাকুরীকালীন সময় কয়েক কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে বানারীপাড়া উপজেলা উত্তরকুল গ্রামের মোজাম্মেল হক নামে একব্যক্তি অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের অনুলিপি বরিশাল জেলা ত্রাণ ও পুনঃবাসন অফিস ও তার বর্তমান কর্মস্থল আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসেও দেওয়া হয়েছে।

    বর্তমান কর্মস্থল আগৈলঝাড়া উপজেলার ইউনিয়নগুলোর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর তদারকি করেন অয়ন সাহা। অভিযোগ উঠেছে এ তদারকির সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিটি প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন শতকরা ৫—১০ পাসেন্ট পর্যন্ত টাকা। টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ সকল প্রকল্প থেকেই অফিস খরচ বাবদ মোটা অংকের টাকা আদায় করে নেন পিআইও অয়ন সাহা। একাধিক ইউপি সদস্য শামীম ফড়িয়া, আনোয়ার হোসেন জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহা প্রতি প্রকল্প থেকে অফিস খরচের নামে টাকা নেন। ফলে উন্নয়ন কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

    তবে, এসব প্রকল্প থেকে ঘুষ নেওয়ায় বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি অয়ন সাহা। এসব প্রকল্পের প্রকল্প সভাপতিরা জানান, পিআইও অফিস থেকে বরাদ্দের টাকার ৮ থেকে ১০ শতাংশ টাকা অফিস খরচের নামে দিতে হয়। এ ছাড়া মাস্টাররোলেও খরচ করতে হয়। অনেক সময় মসজিদ, মন্দির, মাদরাসার বরাদ্দেও ছাড় দেন না তিনি। এসব প্রকল্প সভাপতিরা সবাই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি বলেন, পিআইও অয়ন সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার সাহস কারো নেই। কারণ পিআইও অফিসে এখন ঘুষ বাণিজ্য প্রকাশ্যে হচ্ছে। উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানে প্রতিটি প্রকল্প থেকে অফিস খরচের নামে পিআইও অফিস টাকা নেয়।

    যেখানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেন না, সেখানে আমাদের মতো ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করে বিপাকে পড়তে যাবেন কেন?’ এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহা অনিয়ম ও দুনীর্তির কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার অফিসে এসে দেখে যান আমি কোন কাজে অনিয়ম বা দুনীর্তি করেছি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে লিখিত দেওয়ার কথা জানেন না বলে জানান।

    বরিশাল জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ—সহকারী পরিচালক সুশান্ত রায় বলেন, যে কোন সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির প্রমান পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বনিক জানান, কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমান পেলে ওই দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    আগৈলঝাড়ায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত

    আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ...