ঝালকাঠি সুগন্ধ্যা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভাংচুরের ঘটনায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমি কেকা ও শহর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুসহ ১৭ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রীতা মন্ডল বাদি হয়ে সোমবার ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ নালিশী মামলা দায়ের করেন (সিআর মামলা নং ২৬৪/২০)। বিচারক এ.এইচ.এম ইমরানুর রহমান ঝালকাঠি থানার ওসিকে বাদির অভিযোগ এফআইআর হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ থাকলেও ১৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান শিক্ষক রীতা মন্ডল অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উত্তরপূর্ব কর্নারে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতীক ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে পাঁচলাখ টাকা ব্যয়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। শহীদ মিনারে ছাত্রী ও শিক্ষকরা প্রতি বছর ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন। কিন্তু স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ভাল চোখে দেখছিল না স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত ইসলামী চক্রের দোসর পরিবারের সদস্যরা।
গত ১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়া শারমীন মৌসুমি কেকা, আনিসুর রহমান তাপু ও ফতেমা শরীফের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আরও ১২/১৪ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির ব্যক্তি শাবল, খোন্তা, কোদাল, বড় হাতুড়ি, রড, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ হৈ হুল্লোর ও ডাক-চিৎকার দিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করতে করতে সুগন্ধ্যা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর ঘেরা খেলার মাঠের গেটের তালা ভেঙে অবৈধভাবে স্কুলের কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে শহীদ মিনার ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। স্থানীয় কিছু লোকজন ও কয়েকজন অভিভাবক শহীদ মিনার ভাঙার কারণ জানতে চাইলে ও বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ১ ও ২ নং আসামী পিস্তল ও ৩নং আসামী দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে সকলকে সরে যেতে বাধ্য করেন।
বাদির আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনার একটি গুরত্বপূর্ণ স্থাবর সম্পত্তি। আসামীরা আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার ভাংচুর করে মারাত্মক অপরাধ করেছেন যা দ্রুত বিচার আইনে বিচারযোগ্য।