More

    কার গুলিতে লুটিয়ে পড়েন মুজাক্কির?

    অবশ্যই পরুন

    নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হলে তা থামাতে উভয়পক্ষের ওপরে অ্যাকশনে নামে পুলিশ। ত্রিপক্ষীয় মারমুখী এই পরিস্থিতিতে গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। এসময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন, তাদেরই একজন অনলাইন পোর্টাল বার্তাবাজারের স্থানীয় প্রতিনিধি বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কোনও এক পক্ষের গুলিতে রক্তাক্ত হন মাত্র ২৫ বছর বয়সী এই সাংবাদিক। উন্নত চিকিৎসা দিতে ঢাকায় আনা হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাকে। স্থানীয় রাজনীতির বলি হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, মুজাক্কিরকে গুলি করলো কে বা কারা? কার গুলিতে রক্তাক্ত হয়ে প্রাণ দিলেন তিনি? এই ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখনও জানা যায়নি মুজাক্কিরের সন্দেহভাজন হত্যাকারী কে?

    বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির (ছবি তার ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

    শুক্রবার চাপরাশির হাটের ওই সংঘর্ষের সময় গুলি ছুঁড়েছিল পুলিশ। এ তথ্য স্বীকার করলেও পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, সংঘর্ষের সময় তারা ১০-১২ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়লেও তাতে কেউ আহত হননি। ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন তারা। ফলে মুজাক্কির তাদের গুলিতে আহত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তবে ঘটনাস্থলে থাকলেও মুজাক্কিরকে কে বা কারা গুলি ছুঁড়লো সে সম্পর্কে সরাসরি উত্তর নেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাটির।

    কেউ দায়  না নেওয়ায় বা কাউকে সন্দেহ না করায়

    আপাতত অবস্থা হচ্ছে

    মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেও

    ‘নো ওয়ান কিল্ড মুজাক্কির’।

    কোম্পানিগঞ্জে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা

    এ সংঘর্ষে জড়ানো দুটি পক্ষের একপক্ষে আছেন মন্ত্রীর ভাই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘটনাস্থলে না থাকলেও তার নাম ব্যবহার এবং তাকে নিয়ে মিথ্যাচারের দাবিতেই ঘটে সেদিনের আন্দোলন। তার ভাই বসুরহাট পৌরসভায় আবারও বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এই নির্বাচনের আগে থেকেই স্থানীয় রাজনীতি, ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে কারও কারও অপরাজনীতি, দলীয় টেন্ডারবাজি ইত্যাদির বিরুদ্ধে মাঠে আছেন। জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির নেতাদের নানা দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য হয়েও একদিন আগে (১৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার) পুরো কমিটিই ভেঙে দিয়েছেন তিনি। এতদিন এ উপজেলায় আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিবাদকারী কেউ না থাকলেও এই কমিটি ভেঙে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল। আবদুল কাদের মির্জা অবৈধভাবে কমিটি ভেঙেছেন এ অভিযোগে তিনিও কর্মসূচি দেন। এখানে তিনিও দাবি করেন, ওবায়দুল কাদেরে বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারের’ প্রতিবাদে তার কর্মসূচি। তবে কোনটা মিথ্যাচার তা স্পষ্ট করেননি কোনও পক্ষই।

    পুলিশের লাঠিচার্জে আহত এক কর্মী

    কেন্দ্রীয় নেতার জন্য ভীষণ বিব্রতকর এই পরিস্থিতির ভেতরেই পরদিন শুক্রবার বিকালে উপজেলার চাপরাশিবাজারে পরস্পরের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন দুইপক্ষ। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্ত ঝরে সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৮), উপজেলার বড় রাজাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদের ছেলে সাইদুর রহমান (২৬), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল অমিত (২০) ও বসুরহাট পৌরসভার আবুল কালামের ছেলে রায়হানের (২০)। স্থানীয়দের দাবি, গুলিবিদ্ধ হন মোট ৯ জন। এদিন আহত হন চরফকিরা ইউনিয়নের মো. কাঞ্চন (৬০), মুছাপুর ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে মাসুদ (২৫), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে কামরুল হাসান (৩০), চরফকিরা ইউনিযনের আবদুল মান্নানের ছেলে ফরহাদ (৪০), চরফকিরা ইউনিয়নের বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৮), বসুরহাট পৌরসভা এলাকার আদনান (২৪), মারুফ (২৫) সহ কমপক্ষে ৩৫ জন।

    গুলিবিদ্ধ হন একজন

    বসুরহাট পৌরমেয়র আবদুল কাদের মির্জার দাবি, তাদের কেউ মুজাক্কিরকে গুলি ছোঁড়েননি, ছুড়েছে প্রতিপক্ষ। আর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের দাবি, এ ঘটনা পৌরমেয়রের অনুসারীরা ঘটিয়েছে। পুলিশও ওই সংঘর্ষের তৃতীয় পক্ষ হয়েও নিজেরা দায় না নেওয়ায় বা কাউকে সন্দেহ না করায় আপাতত অবস্থা হচ্ছে মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেও ‘নো ওয়ান কিল্ড মুজাক্কির’।

    পরদিন সবাই যখন মধ্যরাতে অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে মধ্যরাতে শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তার ঘণ্টা দুয়েক আগে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৫)। এ খবর নোয়াখালীতে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরদিন একুশের অনুষ্ঠানমালা পালন হলেও কোম্পানিগঞ্জ আর নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিকরা সহকর্মী বোরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করেন। তবে তাদের অনেকেই সেদিন সংঘর্ষের ঘটনাটির সংবাদ সংগ্রহে ঘটনাস্থলে গেলেও কেউ সুনির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে মুজাক্কিরকে গুলি করার অভিযোগ তোলেননি, অপেক্ষায় আছেন পুলিশি ভাষ্যের।

    হরতালের সমর্থনে আবদুল কাদের মির্জার মিছিল

    সংঘর্ষের সময় উপস্থিত কোম্পানীগঞ্জের এক স্থানীয় সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মির্জা কাদের ও বাদলের অনুসারীদের ধাওয়া ও সংঘর্ষের ছবি তোলার সময় হামলাকারীরা মুজাক্কিরের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় তিনি মোবাইল ফোন ফেরত চাইতে গেলে হামলাকারীরা তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন সাংবাদিক মুজাক্কির। তবে হামলাকারীদের তিনি চিনতে পারেননি বলে দাবি করেন।

    কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মীর জাহিদুল হক রনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শুক্রবারে চাপরাশিরহাটে সংঘর্ষের ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ হাতে পেয়েছি। এটা বাজার পরিচালনা পর্ষদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় কারা অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছিল সেটি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা পর্যালোচনা করে দেখছেন। এই ভিডিও পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে সহায়ক হবে বলে আশাপ্রকাশ করা যাচ্ছে।
    তবে হামলাকারী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না জানান তিনি।

    কোম্পানীগঞ্জে আনা হয় সাংবাদিক মোজাক্কিরের লাশ

    মুজাক্কির নিহতের ঘটনায় তিনদিনেও মামলা হয়নি

    এদিকে, সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৫) মারা যাওয়ার তিন দিন পার হয়ে গেলেও এখনও কোনও মামলা হয়নি। তার পরিবার, পুলিশ, বিবদমান দুটি পক্ষ-কেউ মামলা করতে থানায় আসেনি। এতে বৃহত্তর নোয়াখালীর তিন জেলার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। ক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা মুজাক্কির হত্যার বিচার দাবিতে নোয়াখালী, ফেনী ও দাগনভূঞা জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

    বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কোন দেশে আছি জানি না, যে দেশে সাগর-রুনী হত্যার বিচার হয় না, যে দেশে প্রকাশ্যে গুলি করে মুজাক্কিরকে হত্যার তিন দিনেও মামলা দায়ের হয় না সেখানে আমরা বিচার চাইবো কার কাছে?
    নোয়াখালীর সাংবাদিক আবু নাছের মঞ্জু এই ব্যাপারে চরম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়ার পরও প্রশাসন, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

    বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জাও সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যায় এখনও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত বিচার না হলে, খুনিদের গ্রেফতার করা না হলে কোম্পানীগঞ্জে যে আগুন জ্বলবে সে আগুন রুখবার সাধ্য কার।
    এ দাবিতে কোম্পানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, কাদের মির্জা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার আশায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েও তুষ্ট হননি। শুক্রবার তার নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা ও আমার কর্মী সাংবাদিক মুজাক্কিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

    সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল

    মিজানুর রহমান বাদল বাংলা ট্রিবিউনের কাছে দাবি করেন, মুজাক্কির তার সমর্থক ছিল। এজন্য কাদের মির্জার লোকজন মুজাক্কিরের নামে থানায় মামলা করেছিল।

    তবে সাংবাদিক মুজাক্কির নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পর ২১ ফেব্রুয়ারি বসুরহাট পৌরসভার সোনালী চত্বরে উভয়পক্ষই সমাবেশ ডাকায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞা ভাঙার চেষ্টা করেও প্রশাসন কঠোর থাকায় সন্ধ্যায় পর পৃথক স্থানে উভয়পক্ষ শোকসভার আয়োজন করে।

    সাংবাদিক মুজাক্কিরের বড়ভাই নুর উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় সোমবার ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তার বাবা নোয়াব আলী মাস্টার মামলা করতে যেতে পারেননি। তবে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) যে কোনও সময় তার বাবা মামলার এজাহার লিখতে থানায় যাবেন।

    এদিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের পক্ষ থেকে মুজাক্কিরকে নিজেদের সমর্থক দাবি এবং মুজাক্কিরের নামে থানায় মামলা ছিল এমন প্রসঙ্গে নুর উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তার পরিবারের কারও এমন তথ্য জানা নেই।’

    মুজাক্কিরকে হত্যার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ

    নূর উদ্দিন আরও বলেন, গোলাগুলির ঘটনাটি শুক্রবার আসরের নামাজের পর ও মাগরিবের নামাজের আগে ঘটে। সে সময় কারা গোলাগুলি করেছিল এবং কাদের ছোঁড়া গুলিতে তার ভাই মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হয়েছিল সেটা বাজারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আছে। ওই ফুটেজটি পুলিশের হেফাজতে আছে। সেটি দেখলেই এ বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

    মুজাক্কিরের খুনিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

    আরও পড়ুন:

    কাদের মির্জার অব্যাহতি প্রত্যাহার হয়নি, দাবি একরামুলের (ভিডিও)

    সব কর্মসূচি প্রত্যাহার আবদুল কাদের মির্জার

    আবদুল কাদের মির্জাকে বিকালে অব্যাহতি, সন্ধ্যায় প্রত্যাহার

    আবদুল কাদের মির্জাকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি

    এ প্রসঙ্গে নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভিকটিমের পরিবার এখনও কোনও মামলা না দেওয়ায় তদন্ত শুরু করা যাচ্ছে না।

    কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মীর জাহিদুল হক রনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শুক্রবারে চাপরাশিরহাটে সংঘর্ষের ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ বসুরহাট বাজার পরিচালনা পর্ষদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় কারা অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছিল সেটি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা পর্যালোচনা করে দেখছেন। তা থেকে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে সহায়ক হবে।

    আবদুল কাদের মির্জা

    সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় দায়ের দুই মামলার ১৩৪৪ আসামির কেউ গ্রেফতার হয়নি

    এদিকে, জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় শনিবার রাতে দায়ের হওয়া পুলিশ ও একপক্ষের মামলায় করা এক হাজার ৩৪৪ জন আসামির মধ্যে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

    নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন এই প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কোম্পানীগঞ্জের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এখানকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ রাতদিন কাজ করছে। যার কারণে মামলা দুটির তদন্ত কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। যতদ্রুত সম্ভব মামলা তদন্ত করে আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

    পুলিশ জানায়, শনিবারের ঘটনায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদল বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৬০০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
    একই ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাত পরিচয় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেফতার হননি।

    সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরকে হত্যার প্রতিবাদে সহকর্মীদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ।

    পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে কোম্পানীগঞ্জের সবশেষ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের দ্বন্দ্বে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নিহত সাংবাদিক মুজাক্কিরকে নিয়ে দুপক্ষই অপরাজনীতি করছেন। আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক আছি।

    পুলিশ সুপার আরও জানান, আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল উভয়ই নিহত মুজাক্কিরকে নিজেদের অনুসারী দাবি করে ইতোমধ্যে প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছিল। একইস্থানে এবং একই সময় দুপক্ষ সভা ডাকার কারণে বসুরহাট পৌর এলাকায় সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি ছিল। তারা পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ ও র‌্যাব সারাদিন সেগুলো সরিয়ে ফেলতে কাজ করেছে। এখানকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ রাতদিন কাজ করছে। যার কারণে মামলা দুটির তদন্ত কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। যতদ্রুত সম্ভব মামলা তদন্ত করে আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    গলাচিপায় যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

    মো. মিজানুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার: পটুয়াখালীর গলাচিপায় জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার...