প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম আমতলী উপজেলা সদর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন নির্মাণের দাবীতে মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রবিবার বিকেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে এ সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবী তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধারা গুলিশাখালী গ্রামে মিউজিয়াম নির্মাণ বাতিল করে উপজেলা শহরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সংলগ্ন স্থানে মিউজিয়াম নির্মাণের দাবী জানান।
জানা গেছে, ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলা শহরে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেন। মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম নির্মাণের জন্য বরগুনা এলজিইডি প্রকল্প গ্রহণ করে দরপত্র আহবান করে। কিন্তু বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস প্রকল্প গ্রহণ করলেও মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াল নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করেনি।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন গুলিশাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস ছত্তার উপজেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে গুলিশাখালী ইউনিয়নের একটি অজপারাগায়ে তার নিজ বাড়ীতে ওই মিউজিয়াল নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করে কিন্তু গুলিশাখালীতে মিউজিয়াম নির্মাণের স্থান নির্ধারণে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কিছুই জানেন না এমন অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধাদের। গত বৃহস্পতিবার বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফোরকান খাঁন ওই মিউজিয়ামের কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের জন্য আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আসেন। ওই সময়ে টনক নড়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল নেতৃবৃন্দের। পরে ওইদিন প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তারের বাড়ী গুলিশাখালীতে মিউজিয়াম নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে পারেনি। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা গুলিশাখালী গ্রামে মিউজিয়াম নির্মাণ বাতিল করে উপজেলা শহরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সংলগ্ন স্থানে মিউজিয়াম নির্মাণের দাবী জানান। উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম নির্মাণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রিয় কমান্ড কাউন্সিলের দপ্তর সম্পাদক ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাছাই বাচাই কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট একে এম সামসুদ্দিন শানু।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এমএ কাদের মিয়া, সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান নান্নু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান, নুরুল ইসলাম মৃধা, শাহজাহান কবির, আবুল হাসেম মাষ্টার, আনোয়ার হোসেন ফকির, সামসুদ্দিন আহম্মেদ, শাহেনুর মাষ্টার, জালাল উদ্দিন খান ও দেলোয়ার হোসেনসহ অর্ধ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা।
কেন্দ্রিয় কমান্ড কাউন্সিল দপ্তর সম্পাদক ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাছাই বাচাই কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট একে এম সামসুদ্দিন শানু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের মধ্যে হওয়ার কথা কিন্তু পিরোজপুর নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ আব্দুস ছত্তার তার গ্রামের বাড়ী অজপারাগা গুলিশাখালীতে মিউজিয়াম নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারন করেছেন। যা অত্যান্ত দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, ওই অজপাড়াগায়ে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম হলে কোন মুক্তিযোদ্ধা ওই মিউজিযামে যাবে না। ওই মিউজিয়ামে শুধুই পশুপ্রাণী বসবাস করবে। গুলিশাখালী গ্রামের মিউজিয়ামের স্থান বাতিল করে উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন স্থানে মিউজিয়াম নির্মাণের দাবী জানাই।
বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি মোঃ ফোরকান খাঁন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের তালিকা অনুসারে গুলিশাখালী গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।