More

    বরিশালে মাদকাসক্ত হৃদয়ের আত্মহত্যা নিয়ে নাটকীয়তা, শ্বশুর পরিবারকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র

    অবশ্যই পরুন

    বরিশাল নগরীর পলাশপুরে আব্দুল্লাহ হৃদয় (২৩) নামের এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বহুমুখী রাজনীতির একপর্যায়ে এখন নতুন একটি কৌশল নেওয়ায় হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাউনিয়া থানা পুলিশ গত ৮ মে এই বিয়োগান্তের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যু মামলা গ্রহণ করলেও কয়েকদিনে মাথায় যুবকের মা কুলসুম বেগম অভিযোগ এনেছেন, তার ছেলেকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি ছেলের শাশুড়ি ও বউয়ের বিরুদ্ধে তিনি বরিশাল আদালতে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে নালিশও করেছেন। আদালত তার অভিযোগটি আমলে নিয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

    স্থানীয়রা বলছেন, যেখানে ছেলের লাশ তার ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে এবং ছেলে বউ চাঁদনী আক্তার (১৯) কখনই তাদের বাসায় আসেননি, তারপরেও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগটি নিয়ে পলাশপুরে নানান কথা রটছে। কারও কারও অভিমত হৃদয়ের বিয়োগান্তের ঘটনাটি নিয়ে শুরুতে স্থানীয়ভাবে বহু নাটকীয়তা চলে। এমনকি মেয়ে পরিবারের কাছ থেকে হৃদয়ের পরিবারকে কিছু টাকা এনে দেওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছিল।

    হৃদয়ের শশুর পরিবারের দাবি, এমন প্রস্তাব তাদের কাছে স্থানীয়ভাবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা গরীব মানুষ তাই তাদের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব হয়নি।

    উল্লেখ্য, গত ৮ মে সন্ধ্যায় পলাশপুর ১৩ নম্বর গলির নিজ বাসা থেকে হৃদয় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে পোর্টরোডের মৎস্যশ্রমিক আব্দুল্লাহ হৃদয়। স্বজনদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশ যুবকের লাশটি উদ্ধার করে। এবং ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

    পুলিশ সেই সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিল, মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হৃদয় হতাশায় ভুগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এবং এই প্রাণবিয়োগের ঘটনায় থানা পুলিশ তার মৃত্যুতে একটি অপমৃত্যু মামলা গ্রহণ করে।

    অথচ ঘটনার ৯ দিনের মাথায় ছেলের মা কুলসুম বেগম আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনে ছেলে বউ ও তার মায়ের বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে মামলা করলেন। যদিও এর পূর্বে মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে নানান কৌশল নেওয়া হয়েছি।

    স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, হৃদয়ের মা স্থানীয় কয়েকজনের বুদ্ধি-পরামর্শে চাঁদনীর পরিবারের কাছে অর্থ দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেখানে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। পরবর্তীতে তাদের পরামর্শেই আদালতে মামলাটি করেন। অবশ্য এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশও বিভিন্ন মাধ্যম নিশ্চিত হয়েছে, জানা যায়।

    স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, পার্শ্ববর্তী মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা কামাল বেপারির মেয়ে চাঁদনী আক্তারের সাথে হৃদয়ের প্রেম সম্পর্ক ছিল। এবং চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তারা বিয়েও করে। কিন্তু বিয়ের বিষয়টি উভয় পরিবার অবগত ছিল না এবং তারাও কাউকে অবহিত করেনি।

    চাঁদনীর মা রাজিয়া বেগম জানান, একপর্যায়ে মেয়ের কাছ থেকে বিয়ের বিষয়টি জানতে পারেন। এবং মেয়েকে বোঝানোর পরে হৃদয়কে ডিভোর্স দিতে সম্মত হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি মেয়ের সম্মতিতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হৃদয় তা মেনে নেয়নি, বরং মাঝে মাঝে এসে হুমকি-ধামকি দিয়ে যেত। এবং চাঁদনীর সাথে তার তোলা বিভিন্ন সময়ের ছবি দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। তাছাড়া হৃদয় নেশাগ্রস্তও হয়ে পড়েছিল।

    চাঁদনী জানান, হৃদয় নেশাগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই। এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি ডিভোর্স পাঠিয়ে দিয়েছিল। এর পরে সে বিভিন্ন মাধ্যম যোগাযোগের চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমি সাড়া দেইনি।

    তারপরেও আমি এবং আমার মায়ের বিরুদ্ধে তার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনেছেন তার মা। স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শে তিনি প্রথমে এক লাখ টাকা দাবি করেছিলন। সেই টাকা না পেয়ে এখন তাদের পরামর্শে আদালতে মামলা করেছেন।

    কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম জানান, আদালতের আদেশ এখনও হাতে আসেনি। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে আওয়ামী লীগের মিছিলের চেষ্টা, আটক ৪

    বরিশাল নগরীর কাশিপুরে মশাল নিয়ে মিছিলের চেষ্টাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের চারজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায়...