জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জ্যাব) মেডিকেল সেন্টারের অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ দিয়ে মদ কেনার সময় এক শিক্ষার্থীসহ মোট চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বনশাল থানার ঢাকা ব্যাংকের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের ছাত্র রিপন সাহা (২৮), সাভার কলেজের ছাত্র জুয়েল আহমেদ (২৭), গাড়িচালক জীবন (২৮) ও আসাদুল্লাহ দুলাল (৩৭)।
বনশাল থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘জাবির অ্যাম্বুলেন্সে মদ পরিবহনকালে শিক্ষার্থীসহ চারজনকে আটক করে থানায় দিয়ে দিয়েছি। তারা র্যাগ ডের অনুষ্ঠানের মদ কিনতে এসেছে। আমার ডিউটির সময় শেষ হওয়ায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।’
বনশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মজিবুর রহমান বলেন, মদসহ দুই শিক্ষার্থীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে জবির একটি সূত্র জানায়,‘কয়েকদিন পরেই জাবির ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী উৎসব (র্যাগ ডে) উদযাপন করা হবে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে বংশাল এলাকায় মদ কেনার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রোগী আনার কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে মদ কেনা শেষে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন তারা। পথে ঢাকা ব্যাংকের কাছে পৌঁছানোর পর পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সটি আটক করে।
জাবি মেডিকেলের কর্মরত ডা. নিং তম সিং বলেন, ৪৩ ব্যাচের ফার্মেসি বিভাগের অনিক নামে এক শিক্ষার্থী অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ নিয়েছে। ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কাকরাইল শাখা থেকে রোগী পরিবহনের কথা বলে তারা গাড়িটি নিয়ে যায়।’
জবি মেডিকেলে কর্মরত ডা. নিং তাম সিং জানান, ৪৩ ব্যাচের ফার্মেসি বিভাগের অনিক নামের এক শিক্ষার্থীকে একটি অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ করা হয়েছে। তারা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কাকরাইল শাখা থেকে রোগী পরিবহনের কথা বলে গাড়ি নিয়ে যায়।
অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ তালিকায় থাকা নম্বরে ফোন করলে অনিক বলেন, ‘আমি অ্যাম্বুলেন্সে আছি। ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছি। ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছেন তাই তার ফোন বন্ধ- বলে অনিক ফোন কেটে দেন।
ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. শামসুর রহমান বলেন,’মদসহ দুই শিক্ষার্থী ও ড্রাইভার আটকের বিষয়টি জেনেছি। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি রেজিস্ট্রারকে জানিয়েছি।’
ইতিহাস বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের ছাত্র, ৪৩তম ব্যাচের স্নাতক অনুষ্ঠানের (র্যাগ) আহ্বায়ক প্রীতম আরিফ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আজ রাজা-রাণীপ্রার্থীদের প্রোগ্রাম চলছে। এ বিষয়ে তারা ভালো বলতে পারবে’।
প্রক্টর এএসএম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স যেহেতু চিকিৎসাকেন্দ্রের অধীনে, তারা বিষয়টি দেখবে। আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না’।
চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।