বরিশালে গ্রামের মেয়েদের ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করে ফ্ল্যাট বাড়ির গোপন আস্তানায় (মিনি পতিতালয়) দেহ বিক্রির অভিযোগে অভিযুক্ত নারী দালাল মনছুরা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। দারিদ্র্যের ভিত্তিতে শহর।
মনছুরার কাজ ছিল বরিশালে মেয়েদের প্রলুব্ধ করে দেহ ব্যবসার আড্ডায় বিক্রি করা। বিনিময়ে তিনি ব্যবসার শতকরা এক ভাগ পেতেন। বৃহস্পতিবার সকালে মনছুরাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনার তালতলী থানার ওসি কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু কাজী বলেন, থানায় দায়ের করা মারধরের মামলায় মনছুরা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিষয়টি বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় জানানো হয়েছে। ওই থানায় (কোতোয়ালি) দায়ের করা মানব পাচার, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফির মামলায় আসামি মনছুরাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
অপরদিকে, বরিশাল নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ড বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমানের মালিকানাধীন হাবিব ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া আবুল কালামের গোপন আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া আরেক কিশোরী জানান, মনছুরা পার্লারে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে বাকেরগঞ্জ থেকে বরিশালে নিয়ে আসে।
টানা দুই সপ্তাহ ধরে একটি ফ্ল্যাটে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করা হয় তাকে। এতে রাজি না হলে কালাম ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতন করতো।
উদ্ধারকৃত দুই কিশোরীর দেওয়া তথ্যমতে, বরগুনার তালতলী উপজেলার ৭নং ওয়ার্ডের হুলাটানা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বরিশাল থেকে মেয়েদের অপহরণ করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করত।
একই গ্রামের বকুল মুন্সির মেয়ে মনছুরা বেগমকেও বিক্রি করা হয় কালামের আস্তানায়। সেখান থেকে বেরিয়ে মনছুরা নিজেই কালামের জন্য মেয়েদের ফাঁদে ফেলতে থাকে। কালামের আস্তানায় এ পর্যন্ত অন্তত ছয় মেয়েকে বিক্রি করেছে মানচুরা।
নির্যাতনের শিকার এক শিশুর মা বলেন, পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার পর ওয়ার্ড মেম্বার আলমগীর হোসেন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। থানার এক পুলিশ সদস্য মোবাইল ফোনে ফোন করে এসব সাংবাদিকদের না বলতে বলেন। ফলে চরম আতঙ্কে আছি।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, পাচার ও ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী (১৭) চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আবুল কালাম, তার স্ত্রী রহিমা বেগম, সহযোগী ইব্রাহিম ও মনছুরার সরাসরি সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর একটি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে পাচার হওয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে দুইজন পাচার চক্রের মালিক। বাকিরা তাদের কেনাকাটা করতে ওই হোস্টেলে আসত।