স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ১১ মে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে তেলের ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে কীর্তনখোলা নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
উদ্ধার আবুল কাশেম (৫২) মেঘনা পেট্রোলিয়ামের তেলবাহী ট্যাংকার এমটি ইবাদী-১ এর পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছিলেন।
বরিশাল নগরীতে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ডিপোর জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসা এমটি ইবাদি-১ ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে বৃহস্পতিবার বিকালে বিস্ফোরণ ঘটে। এ নিয়ে এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হলো।
ঘটনার পর ইঞ্জিন রুম থেকে বাবুল কান্তি দাসের (৬০) এবং প্রধান চালক মো. কুতুবউদ্দিনে ছেলে স্বাধীনের (২২) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া প্রধান চালক কুতুবউদ্দিন, দ্বিতীয় চালক রুবেল ও কামালকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তারা ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের একটি দল স্পিড বোট নিয়ে নদীতে টহল দিচ্ছিল। কীর্তনখোলা নদীতে থাকা ট্যাংকারের পূর্ব পাশে কাশেমের লাশ ভেসে ওঠে। দেখতে পেয়ে লাশ উদ্ধার করে বরিশাল সদর নৌ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বরিশাল সদর নৌ থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আত্মীয় স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি জলিল আরও জানান, বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা দুই জনের লাশও মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের অনুদান..
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহেল মারুফ জানান, নিহত তিজনের লাশ দাফনের জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। আহতদের সু-চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরও জানান, তাদের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে একটি টিম গঠন করা হবে। উদ্ধার কাজ শেষ হওয়ার পর তদন্ত টিম গঠন করা হবে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির কাজ শুরু করেছে..
মেঘনা পেট্রোলিয়ামের বরিশাল ডিপোর ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান জানান, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত দল এসেছে। তারা ট্যাংকারে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ট্যাংকারের ইঞ্জিন কক্ষের ক্ষতি হলেও তেলের কিছু হয়নি। তাদের সিলগালা অক্ষত রয়েছে।
কামরুল হাসান জানান, তদন্ত দলের প্রধান সহকারী মহাব্যবস্থাপক ট্যাংকারে থাকা লোকজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার পর ট্যাংকার থেকে তেল অপসারণ করা যাবে কিনা সেই বিষয়ে সিদ্বান্ত দেবে তদন্ত কমিটি। সেই বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দুই দিন আগে প্রায় সাড়ে চার লাখ লিটার পেট্রোল ও ডিজেল নিয়ে ট্যাংকার এমপি ইবাদী-১ এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ট্যাংকারে থাকা পেট্রোল ও ডিজেল খালাস করা কথা ছিল। জেটিতে ভেড়ার জন্য ইঞ্জিন চালু করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে।