আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ৫ বছর ধরে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকা কাজের উদ্বোধন করা হলো।
উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বড় বাশাইল হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১৮ সালে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে এক তলাবিশিষ্ট বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহবান করে উপজেলা এলজিইডি অফিস। টেন্ডারে মেসার্স ইয়ামিন ট্রেডার্স এর ঠিকাদার কাজটি পেয়ে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করতে গেলে বিদ্যালয়ের পাশের জমির মালিকরা কাজে বাঁধা প্রদান করে। এনিয়ে দীর্ঘ দিন আদালতে মামলা চলার কারনে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে মামলটি আদালতেই নিস্পত্তি হয়ে যায়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সরেজমিন গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বিরোধ পূর্ন জমিতে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে ইমামা বানিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন সেরনিয়াবাত, থানার ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার, মলিনা রানী রায়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখর রঞ্জন ভক্ত, উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাইদুল সরদারসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, দীর্ঘ ৫টি বছর একটি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিলো এটা খুবেই দুঃখজনক। আমি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয়দের সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ের জমির বিরোধ নিরসন করে নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করি।
বড় বাশাইল হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর জন্য প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত রুম ছিল মাত্র ৪টি। এর মধ্যে একটি শিক্ষকদের অফিস রুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। যে কারণে শ্রেণিকক্ষ সংকটের জন্য ব্যাহত হচ্ছিল পাঠদান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি স্থানীয় শিক্ষা অফিসে জানালে ২০১৮ সালে ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বাঁধ সাধে স্থানীয় একটি মহল। তাদের বাঁধার কারনে দীর্ঘ ৫ বছর এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেনের হস্তক্ষেপে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন হলো। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ হওয়ার খবরে খুশি শিক্ষক, অভিভাবক ও ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
বড় বাশাইল হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তানভীর হোসেন পান্না বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে এখন আর কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের ইউএনও স্যারের হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন সেরনিয়াবাত জানান, বরাদ্ধকৃত বিদ্যালয়ের ভবন না হওয়ায় বিদ্যালয়টির পাঠদানে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। পরে ইউএনও মো. সাখাওয়াত হোসেনের হস্তক্ষেপে ওই জমি উদ্ধার করে সেখানে বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, বড় বাশাইল হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ২০১৮ সালে ভবন হওয়ার জন্য প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যালয়ের জমিতে স্থানীয় একটি মহল কাজ বন্ধ করে রাখেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার করে ৫ বছর পর ওই বরাদ্ধকৃত টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ শুরু করা হয়েছে।