More

    আগৈলঝাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম—দুর্নীতির অভিযোগ

    অবশ্যই পরুন

    বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকরা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক শিক্ষকরা জানান বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন ভাবে আমাদের জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়। শেখর রঞ্জন ভক্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হওয়ায় আমরা কিছুই বলতে পারি না।

    প্রতি বছরে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক শিক্ষকরা জানান, উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে খেলার জন্য সরকারী বরাদ্দ থাকার পরেও উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে দুইশত টাকা। যে কোন বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির জন্য তাকে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। চলতি বছরের নতুন শিক্ষকরা তাদের আইবাস প্লাস বিল উঠানোর জন্য প্রত্যেক শিক্ষকদের কাছ থেকে ১ হাজার করে টাকা আদায় করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে রাতে নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরী থাকার কথা থাকলেও তারা না থাকায় তাকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।

    শিক্ষকরা সময় মত বিদ্যালয়ে না আসলে ভিডিও কলের মাধ্যমে তাদের কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়ে টাকা আদায় করা হয়। স্কুল ড্রেস, ক্ষুদে স্কুল ড্রেস, বঙ্গমাতা খেলার জার্সি তৈরি করার জন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে আগেই টাকা আদায় করা হয়। শেখ রাসেল কর্নারের বই বাবদ প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এছাড়াও ১৩তম গ্রেডের বকেয়া বাবদ ২ হাজার টাকা। স্লিপ বাবদ প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করা হয়। রুটিন মেরামত বাবদ ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। মাতৃকালীন ছুটি বাবদ ২ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

    ডিপি ইডি ট্রেনিং বাবদ ২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে এবং ট্রেনিং শেষে যোগদানের জন্য পাঁচ শত টাকা আদায় করা হচ্ছে। যে সকল বিদ্যালয় ক্ষুদ্র মেরামত করা হয়, সেই সকল বিদ্যালয় থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। যে কোন অনুষ্ঠানের জন্য ব্যানার বানানোর জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা স্থান নির্ধারন করে দিয়েছে। সেখান থেকেও সে প্রতি ব্যানার বাবদ দুইশত টাকা করে আদায় করছে। জিপিএ ফান্ডে টাকার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর আনতে গেলে ১ হাজার ৫ শত টাকা নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কেনার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ২ হাজার ৫শত টাকা গ্রহণ করে তিনি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত নিম্নমানের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ১হাজার ৭শত টাকা ক্রয় করে বাকী ৮শত টাকা আত্মসাৎ করেন। তার এই উৎকোচ গ্রহনের কাজে সহযোগীতা করে কিছু অসাধু শিক্ষকরা।

    শিক্ষকরা তার অনিয়মের ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হলেও শিক্ষা কর্মকর্তার সামনে বসে কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়নি। কারন তার অধীনে শিক্ষকরা চাকুরী করার কারনে। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন। আমি কোন শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করিনি। উপজেলার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে ইমামা বানিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এঘটনায় সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, আগৈলঝাড়া প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্তের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, আমরা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    আশুলিয়ায় ভাড়া বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের লাশ উদ্ধার

    আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকা থেকে স্বামী, স্ত্রী ও কন্যাসহ একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে...