বিরামহীন ভারী বৃষ্টি ও পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলার অপেক্ষকৃত নিচু এলকার ৩০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে নিচু অঞ্চল হিসেবে কাঁঠালিয়া উপজেলার ১১ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে এই উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের ডালির খালের বাঁধ। ফলে তিন থেকে চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে বাধঁ সংলগ্ন এলাকা।
জোয়ার ভাটার অঞ্চল হওয়ার কারণে প্লাবিত হয় এবং ভাটার সময় মেনে যায় পানি। এই অবস্থা চলছে সপ্তাহ ব্যাপি। অতীতের শ্রাবণে একটানা ৭দিন বৃষ্টিপাতের আমেজ উপভোগ করছে নতুন প্রজন্ম। কিন্তু খাল—বিল নদী নালা ভড়াট হয়ে সংকুচিত হওয়ায় বিপাকে পরেছে এই প্রজন্মের মানুষ। যদিও পাকা আউশ ও আমনের বীজ তলাসহ কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসলের মাঠ পানিতে ডুবে আছে। ভেসে গেছে পুকুর, হ্যাচারি সহ বিভিন্ন জলাশযের মাছ। জোয়ার ও বিরামহীন বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে গ্রামের কাঁচা পাকা ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গোয়ালঘর, গবাদি পশুর খাবার, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ সকল গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের রান্না ঘরের চুলায় পানি ঢুকে পড়ায় ওই পরিবারগুলো রান্না করতে পারছেন না। ফলে ৪টি উপজেলার ৩০ টি গ্রামে মারাত্মক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ জানান, পাকা, আউশ ও আমনের বীজ তলাসহ ভিবিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় প্রয় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থায় চরম দুভোর্গে পড়েছে ঝালকাঠি পৌরসভার কয়েক হাজার নাগরিক। অতি ও টানা বৃষ্টির কারণে শহরের ৯০ভাগ সড়ক পানিতে তলিয়েছে। ঝালকাঠি পৌরসভা অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে শহরের পানি দ্রুত নিষ্কাসন হচ্ছে না। ফলে ড্রেন সংলগ্ন দোকানপাট, বসত বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ঝালকাঠি শহরে এক সময় শহর সংলগ্ন সুগন্ধা, বাসন্ডা নদীর উৎস থেকে ১১টি প্রবাহমান খাল ছিল যেখান থেকে ভাড়ি—ভাড়ি(৫শ—৬শ মন) মালা মাল নিয়ে এই খাল দিয়ে শহরের কেন্দ্রে প্রবেশ ও বাহির হতো। কিন্তু প্রায় ৩দশক ধরে পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বহীনতার চরম অবহেলা ও পৌর নাগরিকদের মধ্যে এক শ্রেণির লোভি ও অসাধু নাগরিক খাল ভড়াট করে দখল করায় ১১টি খাল বিলুপ্ত হয়ে ড্রেনে রূপ নেয়। হাতে গোনা পূর্বচাঁদকাঠী ও থানার খালের কিছু অংশ এখনও খাল রূপে দৃশ্যমান।