আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মান প্রকল্পের আওতায় ২০২২—২৩ অর্থবছরে বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর নামে বীর নিবাস এর একটি ঘর বরাদ্ধ দেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাড়ির পরিবর্তে অনিয়মের মাধ্যমে তার (মুক্তিযোদ্ধার) মেয়ের শ্বশুর বাড়ির জমিতে বীর নিবাস করার জন্য অনুমতি দেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর ছেলে নাসির সেরনিয়াবাত ১৩ আগস্ট রোববার লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এম ইদ্রিস সিদ্দিকীসহ ১০ জনকে। সূত্রে জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের সেরাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর নামে ১১ মে ২০২৩ তারিখে মুবিম/ পিডি/ অ.বী. মু আ.নি.প্র/ম.—০২/২০২২/৬১১ নং স্মারকের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এম ইদ্রিস সিদ্দিকীর স্বাক্ষরে অনুমদিত হয়।
আগৈলঝাড়া উপজেলার ৬৬ বীর নিবাস অনুমোদন হয় তার মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর ক্রমিক নং—৩৫। ওই বীর নিবাস নির্মানে স্থান দেখানো হয়েছে উপজেলার ফুল্লশ্রী মৌজার খতিয়ান নং ৪০১৮ ও দাগ ১৫১৯ জমির পরিমান ৫ শতাংশ। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর বাড়ির জেএল ৭০ নং সেরাল মৌজার বিএস ৩৬০ নং খতিয়ান বিএস দাগ ৩৩৪,৩২৮। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর কন্যা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিউটি হক প্রতারনা করে তার শ্বশুরের জমিতে বীর নিবাস নির্মান করার জন্য আবেদন করে।
মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নাসির সেরনিয়াবাতের দাবি মরহুম পিতার নিজনামের জমিতে তার কবরের পাশে বীর নিবাস নির্মান করার জন্য। এঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর ছেলে নাসির সেরনিয়াবাত তার পিতার বাড়িতে বীর নিবাস নির্মানে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এম ইদ্রিস সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বরিশাল জেলা প্রশাসক, আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর কন্যা বিউটি হককে।
নাসির সেরনিয়াবাত বলেন, আমার বোন বিউটি হক উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়াতে প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে আমার পিতার নামে ‘বীর নিবাস’ ঘর বিউটি হক (বোন) আত্মসাৎ করার জন্য এবং আমার পিতার স্মৃতি মুছে ফেলতে তার শ্বশুর বাড়ি শ্বশুরের জমিতে তৈরি করতে চায়। এব্যাপারে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিউটি হক বলেন, আমার বড় ভাই মরহুম গিয়াস উদ্দিন জীবিত থাকতে এবং বড় বোন মেরী বেগম ও নাসির উদ্দিন নিজে আমাকে শ্বশুর বাড়ি করার জন্য বলে ছিলো। তাদের কথা মতো আমি শ্বশুরের জমিতে করতে চেয়েছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, রোববার বিকেল পর্যন্ত আমি নোটিশ পাইনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত কোন নোটিশ হাতে পাইনি। এব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এম ইদ্রিস সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য দেয়া যায়নি।