স্টাফ রিপোর্টারঃ একটা সময় ছিল গ্রামে সাপে কাটা রোগীরা সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে মারা যেতো। তবে বদলেছে সেই চিত্র।
পটুয়াখালীতে অ্যান্টিভেনোমের ব্যবহার বাড়ায় কমেছে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা। বর্তমানে সরকারিভাবে সাপে কাটা রোগীকে প্রথম ১০০ মিনিটের মধ্যে অ্যান্টিভেনোম প্রয়োগের ফলে পটুয়াখালী জেলায় সম্প্রতি সময়ে প্রাণরক্ষা হয়েছে প্রায় ২৫০ জন মানুষের।
এতে করে খুশি স্থানীয়রাও। সম্প্রতি জমিতে কাজ করার সময় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামের কৃষক মোঃ রমজান মৃধার (৭৪) দুই হাতেই সাপ কামড় দেয়। কৃষক মোঃ রমজান মৃধা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম আর বাঁচবো না।
আল্লাহ বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করার উছিলায় ভালো করে দিয়েছেন।‘ এ ছাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নিজকাটা গ্রামের বাসিন্দা রমেশ চন্দ্র হাওলাদার (৬৫) এর গল্পটাও একই।
সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি। কলাপাড়া টক্সিকোলজী সোসাইটি অব বাংলাদেশ প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো: নুরুজ্জামান সৈকত বলেন, বর্ষা মৌসুমে সাপে কাটা রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
গ্রামের মানুষের অজ্ঞতার কারণে সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালে না নিয়ে সাধারণত ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায় রোগীটি। টক্সিকোলজী সোসাইটি অব বাংলাদেশ গ্রামের মানুষদের বুঝিয়ে হাসপাতালমুখী করছে এতে মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে।
সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অ্যানিমেল লাভার অব পটুয়াখালীর সভাপতি শামিম আহমেদ বলেন, সাধারন মানুষকে ওঝা নির্ভরতা কমিয়ে হাসপাতালমুখী করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
এ পর্যন্ত অ্যানিমেল লাভার অব পটুয়াখালীর সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৫০ জন সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এসে অ্যান্টিভেনম দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা চিন্ময় হাওলাদার বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে। রোগী এলেই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
বর্তমানে সাপে কাটা রোগীদের হাসপাতালে আসা বেড়েছে। সাপে কাটলে ওঝার কাছে নয়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাসপাতালে আসতে হবে এতে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে।
সরকারী হাসপাতাল ও প্রাণী কল্যাণ সংগঠনের তথ্য মতে, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সাপে কাটা ১১৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।