More

    একজন জনপ্রিয় ‘মানবিক ইউএনও’র বিদায়

    অবশ্যই পরুন

    আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ একজন জনপ্রিয় ‘মানবিক ইউএনও’ হিসেবে পরিচিতি নিয়েই বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা থেকে মঙ্গলবার বিদায় নিয়েছেন ইউএনও মো. সাখাওয়াত হোসেন।

    যোগদানের কয়েক দিনের মধ্যেই নিজ গুণে সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। উপজেলাবাসী একজন সজ্জন, কর্মঠ, জনবান্ধব ও দক্ষ অফিসারকে হারিয়ে আজ বেদনাবিধুর। সাখাওয়াত হোসেন ৩৪ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে সহকারী কমিশনার হিসেবে প্রথমে যোগদান করেছিলেন।

    তিনি ২০২২ সালের ১৩ মার্চ ইউএনও হিসেবে আগৈলঝাড়ায় যোগদান করেছিলেন। মাঠ পর্যায়ে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করা জনপ্রিয় এই কর্মকর্তা সততা, দক্ষতা ও আন্তরিকতা দিয়ে আগৈলঝাড়াবাসীর ভালবাসা জয় করে নিয়েছিলেন, বিদায়লগ্নে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন।

    তিনি আগৈলঝাড়ার উন্নয়নে উপজেলা পরিষদ ভবনে কনফারেন্সরুম আধুনিকায়ন ও দর্শনার্থীদের জন্য গ্রন্থাগার নির্মান, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের আধুনিকায়ন, উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ সুকান্ত আব্দুল্লাহ শিশু পার্ক নির্মান, উপজেলা জাতীয় ঈদ গাঁ ময়দানের আধুনিকায়ন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে গভীর নলকূপ বিতরন, উপজেলা পরিষদের সামনে ফুল বাগান নির্মান, প্রতিটি সরকারী দপ্তরে অবৈধ আর্থিক লেদদেন বন্ধ করা, উপজেলা পরিষদের গেট নির্মানের উদ্যোগ নেয়া, আগৈলঝাড়ায় পর্যটন এলাকার উন্নতি লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোসহ বিভিন্ন কাজ করেছেন।

    সমস্ত লোভ লালসার উর্ধ্বে থেকে নিজ প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তোলেন জনবান্ধব ও বিপদগ্রস্ত মানুষের আশ্রয়স্থল। এদের মধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন নেহাতেই কোন কম ছিলো না।

    অনেক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ভেজাল বিরোধী অভিযান, পরিবেশ রক্ষার অভিযান, অবৈধ বালু উত্তোলন, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং প্রতিরোধে বেশ ভালো প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

    তাঁর বন্ধু সুলভ আচরন ও কর্মদক্ষতায় পরিবর্তন এনে দিয়েছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। সাধারণ মানুষের সাথে প্রশাসনের সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে জেলা প্রশাসন ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছেন তিনি। বান্ধবপূর্ন এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

    বন্ধুসুলভ ও তরুন অভিভাবক হয়ে দক্ষ প্রশাসক হিসেবে উপজেলার সব শ্রেণি—পেশার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যে উপজেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মন জয় করেছিলেন তিনি। নিম্ন শ্রেণি থেকে উচ্চপদস্থ লোক খুব সহজে তার কাছে যেত পারত। কোন ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।

    এছাড়া তার বিদায় বেলায় ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি, ইলিয়াস তালুকদার, বিপুল দাস, শফিকুল ইসলাম টিটুর সাথে কথা হলে তারা বলেন, তিনি মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য যে পরিশ্রম করেছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার কর্মের কথা উপজেলাবাসী সবসময় মনে রাখবে। প্রত্যেকটি মানুষের কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনতেন ও সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতেন।

    সারাক্ষণ উপজেলার উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। তিনি সৎ, উদ্যামী ও কর্মঠ ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং সমাজের বিশিষ্টজনেরা সব সময় আমার কাজে সহযোগিতা করছেন। আমি আপনাদের কথা ভুলবো না।

    রাষ্ট্র ও জনগনের কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে আমার অগোচরে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এই যাবার বেলায় উপজেলাবাসীর কাছে আমি দোয়া কামনা করছি। এই এলাকার মানুষের জন্য সবসময় আমার থাকবে অবিরাম ভালোবাসা।

    সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি। উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মলিনা রানী রায় বলেন, তিনি খুবই ভালো মানুষ। পরিশ্রমী, দক্ষ ও সৎ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি একজন সৃজনশীল ও মানবিক ইউএনও। তিনি কোন কল্যাণকর কাজ থেকে কখনো পিছুপা হননি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন সেরনিয়াবাত বলেন, মানবিক, সৎ ও সাহসী মানুষ ছিলেন ইউএনও মো. সাখাওয়াত হোসেন।

    তিনি সততা ও দক্ষতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার সততা ও ন্যায়পরায়ণতায় আমরা মুগ্ধ হয়েছি। তিনি অত্যন্ত উদার মনের মানুষ। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বলেন, তার কর্মের কথা উপজেলাবাসী সবসময় মনে রাখবে।

    প্রত্যেকটি মানুষের কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনতেন ও সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতেন। সারাক্ষণ উপজেলার উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। তিনি সৎ, উদ্যামী ও কর্মঠ মানুষ ছিলেন।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারী নিহত

    বেপরোয়াগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় রতন দাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ পথচারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী দুইজন...