More

    বিসিসির কোটি টাকার রাস্তায় বিসিকের সীমানা প্রাচীর, সমালোচনায় মেয়র খোকন

    অবশ্যই পরুন

    স্টাফ রিপোর্টারঃ বরিশাল সিটি করপোরেশনের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাউনিয়া বিসিক রোডের বর্ধিত অংশ কেটে গর্ত করে বিসিকের স্থায়ী সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার উপরে অবৈধভাবে বিসিকের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের আড়ালে ব্যাক্তিকে খুশি করায় সমালোচনার ঝড় বইছে মেয়র খোকনের সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে।

    বিসিক শিল্প এলাকা হওয়ায় এখানে হাজারো মানুষের বসবাস। বিগত সময়ে রাস্তা সরু ও ভাঙাচোরা থাকায় প্রায় মর্মান্তিক দূর্ঘটনার কবলে পরতে হত চলাচলকারীদের। পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের অনুরোধে বিসিক রোডটি কর্পোরেশনের নিয়মানুযায়ী দুই পাশে বর্ধিত করাসহ অত্যন্ত টেকসই করেই নির্মাণ করেন বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। সে সময়েও বিসিক অফিসের কর্মকর্তারা অবৈধ ভাবে সিটি করপোরেশনের রাস্তার উপরেই সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার চেষ্টা করলে তা শক্ত হাতে দমন করেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ । আর তাতেই সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় বিসিক শিল্প নগরীর কথিত চলমান উন্নয়ন কাজ। আর তাতেই ক্ষোভে ফুসে ওঠেন বিসিক মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান ও তার সহোযোগীরা।

    ব্যবসায়ী সূত্র মতে, বিসিকের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকালেই মেয়র সাদিকের লোকজন তথা বিসিসির সাথে বিসিক অফিস ও বিসিক মালিক সমিতির সভাপতির সাথে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। বিসিক অফিসের ব্যানারে বিসিক মালিক সমিতির কথিত সদস্যরা সিটির রাস্তার উপরেই সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু করলে সেখানে স্ব-শরীরে উপস্থিত হন ততকালীন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। আর সে সময়েই বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে বিসিকের ব্যবসায়ী আলম মৃধার স্বমিলের সামনেই বিসিক মালিক সমিতির সভাপতির ছোট ভাই শফিকের সাথে হাতাহাতি হয় মেয়রের লোকজনের। একই ঘটনার সূত্র ধরে কিছুদিন পরেই সাদিক আব্দুল্লাহর সোহাগ নামের এক কর্মীকে ফরচুন কোম্পানির ভিতরে নিয়ে মারধর করেন ফরচুন স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান ও তার সহোযোগীরা।

    ঘটনা সূত্রে জানা যায়- এই সোহাগ এক সময় ফরচুন মালিক মিজানুর রহমানের বিশ্বস্ত সহোযোগী ছিলো। সেই ঘটনায় মামলাও হয়েছিল বলে জানান তারা। অনাকাঙ্ক্ষিত সকল ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই সময় সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় বিসিক শিল্প নগরীর কথিত উন্নয়ন কাজ। বন্ধ হয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত টাকার হরিলুট। কিন্তু কয়েকদিন না পেরোতেই নতুন করে বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাদিক আব্দুল্লাহর বদলে নৌকার মনোয়নয়ন পান তার চাচা সেরনিয়াবাত খোকন আব্দুল্লাহ। এতেই বদলে যায় বরিশালের চিত্র।

    বিশ্বস্ত গোপন সূত্র জানায়, বিসিকের ঘটনাসহ কতিপয় বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাদিককে দমন করতেই তার চাচা খোকন সেরনিয়াবাতকে টার্গেট করেন তার শত্রুরা। সিটি নির্বাচনে ড্রাইভার ও নিজস্ব প্রাডো গাড়ি দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে মেয়র খোকনকে জয়লাভ করাতে সরাসরি কাজ করেন বিসিক মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান। এমনকি খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র নির্বাচিত হতেই বরিশালে নিজের শক্তিমত্তার জানান দেয়ার পাশাপাশি ভাইয়ের অপমানের বদলা নিতেই জনগণের ট্যাক্সের টাকায় নির্মিত রাস্তাটি কেটে নষ্ট করে পুনরায় শুরু করেন রাস্তার উপরে অবৈধ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ। এমনকি রাস্তার উপরের অবৈধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধনও করেন মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত নিজেই। এমনকি সেখানে কাজের শুরুতেই মিজানুর রহমানের সেই ভাই শফিককে দেখা যায় দলবল নিয়ে এসে নির্মাণ কাজের নির্দেশনা দিতে। তিনি বেশ জোর গলায়ই বলছিলেন বরিশালের মেয়র এখন আমরা। আর এতেই ক্ষোভের জন্ম হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সাধারণ জনগণের মাঝে। শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। খোকন সেরনিয়াবাতের মত একজন মেয়রের এমন নিন্দনীয় কাজের সমালোচনা করেন সকলেই। প্রশ্ন ওঠে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্বশীলতার উপরে। দায় সারতে কথা বলতে নারাজ সকলেই।

    কিন্তু স্থানীয় কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন- উদ্বোধন করলেও আদৌ মেয়র মহোদয় জানেন না বিসিক রাস্তা নষ্ট করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার বিষয়টি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকায় ঘটনাটি চাপা পরেছে বলে দাবি জানান তারা।

    এ বিষয়ে বিসিসির রোড ইন্সপেক্টর রেজাউল কবির জানান, ঘটনা জানা মাত্র বিষয়টি মেয়র মহোদয়ের এপিএস মাহাদী সাহেবকে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন।

    এ বিষয়ে বিসিকের শিল্পনগরী কর্মকর্তা গোলাম রসূল রাসেল জানান, আমরা আমাদের জায়গায়ই দেয়াল করছি, সিটি করপোরেশনের সাথে আমাদের কোন দ্বন্দ্ব নেই।

    এ বিষয়ে জানতে বিসিক মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

    সিটি করপোরেশনের জায়গায় রাস্তা থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে স্থায়ী স্থাপনা নির্মানের নিয়ম থাকলেও সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র বিসিকে। নির্দিষ্ট দূরত্বের পরিবর্তে বিসিসির রাস্তার জায়গার উপরেই চলছে খননের কাজ। দ্রুতই এমন ন্যাক্কারজনক কাজ বন্ধ করে জনগনের চলাচলের রাস্তা সহ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    সাংবাদিক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীরকে সংবর্ধনা প্রদান

    নিজস্ব সংবাদদাতা: জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, মাদারীপুর জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ত্রৈমাসিক আলোচনা সভা ও এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।...